জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, বর্তমান সংবিধানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এখানে প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাই ক্ষমতার ভারসাম্য চায় এনসিপি। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর দেড়টায় শেরে বাংলা নগরে সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠকের প্রথমার্ধ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠক শুরু হয় সকাল পৌনে ১১টায়। শেষ হবে বিকাল ৪টায়।
আখতার বলেন, ‘বৈঠকে আমরা মৌলিক সংস্কারের কথা বলেছি। গণপরিষদ নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া যেন শান্তিপূর্ণ হয়, সে প্রস্তাবও তুলে ধরেছি আমরা। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের কথা বলেছি।’
নির্বাচনের আগে গণহত্যার বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যে ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তা দৃশ্যমান করতেই নির্বাচন প্রয়োজন। অবশ্য তার আগে গণহত্যার বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। তার জন্য যে সময় দরকার সরকার তা পেতেই পারে। সে বিষয়ে আমরা কমিশনের কাছে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরেছি। তত্ত্বাবধায় বা নির্বাচনকালীন সরকারের ক্ষেত্রে নির্বাচন শব্দটি যুক্ত করার কথা বলেছি। নির্বাচনের দায়িত্বটাই তারা পালন করবেন, আমরা সেই বিষয়টার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছি।’
এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিচার বিভাগ, নির্বাচন, প্রশাসন ও পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করেছি। দুদকসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে এখনও আলোচনা করতে পারিনি। তবে পুলিশ সংস্কারের বিষয়টি এখানে কেন অন্তর্ভুক্ত তা জানতে চেয়েছি।’
এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান কেন হয়েছে, আগে তা উপলব্ধি করতে হবে। একচ্ছত্র ক্ষমতার বিষয়টি যেন না থাকে তাও উল্লেখ করা হয়। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যদি আগের মতোই হয়, তাহলে কোনও লাভ নেই। জাতীয় স্বার্থে এসব বিষয় আমাদের ঐকমত্যে পৌঁছতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, আমরা দুটি নির্বাচন চাই। আসলে আমরা একটি নির্বাচনই চাই। যার নাম হবে আইনসভার নির্বাচন। সেটা পরে গণপরিষদের মর্যাদা পাবে। কারণ যেকোনও সংশোধনী পরবর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ করতে পারে। যেমন-বিগত সরকারের ১৫তম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। গণপরিষদের নির্বাচনের মাধ্যমে করা আমাদের এখনকার সংশোধনীগুলো নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।’
বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে বৈঠকে আছেন– কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এনসিপির পক্ষে আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ ছাড়াও রয়েছেন– আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ আরও দুজন।
খুলনা গেজেট/ টিএ