বরিশালে বাস মালিক-শ্রমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। দুই পরিবহন শ্রমিককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং তাদের মুক্তির দাবিতে রূপাতলী বাস শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ রেখে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে। বিপরীতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করছেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় শিক্ষার্থীদের মারধরের মূল হোতাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়ক অবরোধ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রুপাতলী মিনিবাস টার্মিনালের সামনে সুরভি চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে বরিশাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি রুটে যাত্রী পরিবহন বন্ধ রয়েছে।
বরিশাল পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলায় আমাদের শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যারা জড়িতই নয়। আমাদের কোনো লোক ছাত্রদের মারধর করেনি। কারা করেছে তাও জানি না। আমরা তাদের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছি। তবে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের দুই শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন করছে। আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। মারধরের অভিযোগে রনি ও ফিরোজ নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে রূপাতলী হাউজিংয়ের সি-ব্লকের হারুন ম্যানশন ভবনের মেসে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সেখানে অবস্থানকারী ছাত্রদের মারধর করে মারাত্মক জখম করা হয়। হামলায় ১১ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ছুরি দিয়ে কোপ দেন রূপাতলী বিআরটিসি কাউন্টারের সহকারী রফিক। এ সময় আরও এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেন রফিক ও কাউন্টারম্যান বাদল। প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিআরটিসি কাউন্টার ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করেন। সড়ক অবরোধ তুলে দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে আসেন শ্রমিক ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ। এ সময় শ্রমিক নেতা কাওছার হোসেন শিপনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় শিক্ষার্থীদের। সড়ক অবরোধের মধ্য থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে ২৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন মোল্লাকে লাঞ্ছিত করেন শিক্ষার্থীরা। সেই ঘটনার রেশ ধরে কাওছার হোসেন শিপন, রফিকুল ইসলাম মানিকের লোকেরা রাতে মেসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বলে দাবী করেন শিক্ষার্থীরা। তবে কাওছার হোসেন শিপন বলেন, এই হামলা বা ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
হামলার পর পরই রাত আড়াইটার দিকে সড়কে কাঠ পুড়িয়ে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের আশ্বাসে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় ১৪ ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি অনুসারে মামলা দায়ের না করায় শুক্রবার থেকে আবারও আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।
খুলনা গেজেট/এনএম