জুলাইয়ের রক্তাক্ত রাজপথের রেশ কাটতে না কাটতেই বাংলাদেশে নেমে আসে ভয়াবহ বন্যা। আন্দোলনের আবেগের সাথে এবার বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যও একত্রিত হলো মানুষ। অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবী দল খাবার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে ছুটে গেলেও, থার্ড আই (Third Eye) নামে একটি দল বেছে নেয় ভিন্ন পথ। তারা কাজ শুরু করে আশ্রয়হীনদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয় নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে।
বন্যার ফলে বাড়িঘর হারানো পরিবারগুলোর পুনর্বাসন বিলম্বিত হওয়ায়, তাদের সাহায্যার্থে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের দারুণমল্লিক, কালীনগর ও হরিণখোলা গ্রামের বন্যাকবলিত মানুষের জন্য অস্থায়ী আশ্রয় নির্মাণের পরিকল্পনা করে থার্ড আই। সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চিহ্নিত করে তারা। থার্ড আই এর ভলান্টিয়ার মো. রায়হানুজ্জামান বলেন, “একই পরিবার বারবার সাহায্য পেলেও, অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছিল। তাই আমরা সরেজমিনে ঘুরে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করেছি।”
থার্ড আই এর সংগঠকদের একজন, আর্কিটেক্ট সাইদুর রহমান লুশান অস্থায়ী আশ্রয় নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। যেখানে তেরপল, বাঁশ ও দড়ি দিয়ে তাঁবুর মতো করে ছাউনি দেওয়া হয়। বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রেখে নির্মাণ করা হয় এই তাঁবু, যা বানভাসীদের জন্য সাময়িক আশ্রয়। অতিসাধারন এ ব্যবস্থাই বানভাসীদের জন্য যেন শাপে বর। এতে অনেক পরিবারই নিজেরা আশ্রয় নেওয়ার পাশাপাশি তাদের গৃহপালিত পশুর জন্যও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়।
এ পর্যন্ত থার্ড আই তিন গ্রামের সর্বমোট ৮০ টি পরিবারকে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সংগঠক আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর জানান, “স্বল্প খরচে দ্রুত নির্মাণযোগ্য এই আশ্রয়গুলো ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন প্রকল্পের অংশ হতে পারে। ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে এর অর্থসংস্থান করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে থার্ড আই ভবিষ্যতে শিক্ষা, অর্থনীতি ও রাজনীতির পাশাপাশি সমাজ সংস্কারের অন্যান্য বিষয়াবলী নিয়ে কাজ করবে বলে এর সংগঠকবৃন্দের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম