খুলনায় বঙ্গবন্ধু সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লীগের প্রিমিয়ার বিভাগে উইনার্স ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। একম্যাচ হাতে রেখেই তারা এ গৌরব অর্জন করল।
বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন খুলনা আয়োজিত এবং বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লীগে দিনের দ্বিতীয় খেলায় তারা ৪-০ গোলের বড় জয় পায় মহেশ্বরপাশা ক্লাবের বিপক্ষে। আগামী ২২ আগস্ট তাদের শেষ খেলা মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের সঙ্গে। ওই দিন তারা হারলেও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকবে উইনার্স ক্লাব।
দিনের দ্বিতীয় খেলায় এদিন উভয় দলের ছিল এটি ছিল ৫ম ম্যাচ। সেখানে উইনার্সের ৫ খেলার সব কয়টিতে জয় নিয়ে ১৫ পয়েন্ট। পক্ষান্তরে মহেশ্বারপাশার ছিল ২ জয়, ১ পরাজয় ও ২ ড্র নিয়ে ৮ পয়েন্ট। শক্তির দিক থেকে অনেক এগিয়ে থেকে মাঠে নামে উইনার্স। শুরুতেই মহেশ্বারপাশা এলোমেলা খেলা শুরু করে। আর এ সুযোগে উইনার্স আক্রমণের গতি বাড়িয়ে দেয়। খেলার ১৫ মিনিটের মাথায় উইনার্সের ৮নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় সাকিব গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় (১-০)।
গোল হজম করে সমতার আশায় আক্রমন শুরু করে মহেশ্বারপাশা। তবে উইনার্সের শক্ত রক্ষণভাগ ভেদ করতে পারেনি মহেশ্বারপাশার স্টাইকাররা। পিছিয়ে থেকে বিরতীতে যায় মহেশ্বারপাশা। বিরতী থেকে ফিরে উভয় দলই আক্রমন-পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে। সে সময় খেলা চলে মধ্য মাঠে। এরপরও মহেশ্বারপাশা ক্লাব গোল পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ৪৭ মিনিটের সময় উইনার্সের ৭নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় হুদা গোল করে দলের স্কোর বাড়ায় (২-০)। ২ গোলে পিছিয়ে পড়ে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে মহেশ্বারপাশা। এ সুযোগে মহেশ্বারপাশার ১০নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় আকাশ ৫৮ ও ৭৬ মিনিটে পরপর দু’টি গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করে (৪-০)। আর এই জয়েই প্রিমিয়ার বিভাগে উইনার্স ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। খেলাটি পরিচালনা করেন রেফারী কামাল আহমেদ, আলী আকবর, জসিম উদ্দিন ও জুনায়েদ শরীফ। ম্যাচ কমিশনার ছিলেন মোশারফ হোসেন।
দুপুর আড়াইটায় দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় শেখ কামাল স্মৃতি সংসদ ও এসবিআলি ফুটবল একাডেমি। খেলায় শেখ কামাল স্মৃতি সংসদ ৩-১ গোলে এসবিআলি ফুটবল একাডেমিকে পরাজিত করে। এদিন উভয় দলের ছিল এটি ছিল ৫ম ম্যাচ। সেখানে শেখ কামালের ৩জয় ও ২ড্র নিয়ে ১১ পয়েন্ট। পক্ষান্তরে এসবিআলীর ছিল ৪ জয় ও ১ ড্র নিয়ে ১৩ পয়েন্ট। শক্তির দিক থেকে উভয় দলই ছিল সমানে সমান।
শুরুতেই উভয় দল গোছানো ফুটবল শুরু করে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্যে দিয়ে চলতে থাকে খেলা। খেলা দেখে মনে হয় দল দুটি’র শক্তি সমানে সমান। হঠাৎ শেখ কামাল আক্রমনের গতি বাড়িয়ে দেয়। খেলার ১৯ মিনিটের সময় শেখ কামালের ১০নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় সাকিল গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় (১-০)। গোল হজম করে পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে এসবিআলী। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তারা। তবে শেখ কামালের রক্ষণভাগ ভাঙ্গতে ব্যর্থ হয়। আক্রমণে এগিয়ে থাকে শেখ কামাল। যেভাবে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে, তাতে মনে হয় যে কোন সময় যে কোন দল এগিয়ে যেতে পারে। আর সেটাই হয়েছে। ৩৩ মিনিটের সময় শেখ কামালের ১১নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় রেজওয়ান গোল করে দলের স্কোর বাড়ায় (২-০)।
৩৮ মিনিটের সময় দলের ১১নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় রেজওয়ান দলের গোল সংখ্যা বাড়ায় (৩-০)। ৩ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতীতে যায় এসবিআলী। বিরতী থেকে ফিরে উভয় দলই আক্রমন-পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে। ২মিনিটের মাথায় এসবিআলীর ১২নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় মাহবুব গোল করে দলের ব্যবধান কমান (৩-১)। আগের ম্যাচগুলোতে এসবিআলি ফুটবল একাডেমি দর্শকদের যে খেলা উপহার দিয়ে ছিল এ ম্যাচে তার কোন নমুনা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বল পজিশনে অনেক এগিয়ে ছিল শেখ কামাল। জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে খেলেছে তারা। শেষ দিকে সহজ দু’টি গোল মিস না হলে হয়তো ব্যবধান আরও কমাতে পারতো এসবিআলি। খেলাটি পরিচালনা করেন রেফারী সুমন রাজু, কামরুল আযম বাবু, তানভির আহমেদ ও আজিবর রহমান। ম্যাচ কমিশনার ছিলেন নৃপেন রায় চৌধুরী। খেলা দু’টির মনোমুগদ্ধকর ধারাভাষ্য ছিলেন এডভোকেট এম এম সাজ্জাদ আলী ও এডভোকেট প্রজেশ রায়।
মাঠে উপস্থিত ছিলেন জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী, কোষাধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম খান কালু, কার্যনির্বাহী সদস্য ও লীগ কমিটির সম্পাদক সুজন আহমেদ ও সদস্য ও লীগ কমিটির সহ-সম্পাদক মনিরুজ্জামান মহসীন। ১৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার জেলা স্টেডিয়ামে একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। দিনের একমাত্র ম্যাচে বিকেল পৌনে ৪টায় মুখোমুখি হবে মৌসুমী একাদশ বনাম উল্কা ক্লাব।
খুলনা গেজেট/ টি আই