খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

ফ্রান্সে মেয়রের বাড়িতে আগুন, এক রাতে গ্রেপ্তার ৭১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফ্রান্সে চলমান বিক্ষোভের ৫ম দিনে রাজধানী প্যারিসের এক মেয়রের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া ভাঙচুর ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শনিবার রাতে রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৭১৯ জন।

সিএনএন, এএফপি, বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানী প্যারিসের উপশহর লিলেস রোজেসের মেয়র ভিনসেন্ট জিনব্রানের বাসভবনে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা বাড়ির বাইরে মেয়রের গাড়ি ভাঙচুর এবং বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

ফ্রান্সের রক্ষণশীল দল লেস রিপাবলিকান পার্টির জেষ্ঠ্য নেতা ভিনসেন্ট জিনব্রান এ সময় এক জরুরি বৈঠকে বাড়ির বাইরে ছিলেন। বাড়িতে তার স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে একদল বিক্ষোভকারী বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে।

মেয়রের স্ত্রী এ সময় দ্রুত তার সন্তানদের নিয়ে বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় তিনি (মেয়রের স্ত্রী) এবং তাদের এক সন্তান আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

রোববার এক বিবৃতিতে ভিনসেন্ট জিনব্রান বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা অকথ্য কাপুরুষতা দেখিয়েছে। আমি এক জরুরি বৈঠকে গতকাল সিটি হলে ছিলাম। রাত দেড়টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ লোক আমার বাড়ির গেট ভেঙে ঢুকে প্রথমে গাড়ি ভাঙচুর এবং পরে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আমার স্ত্রী তখন আমাদের দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন।’

‘জীবন বাঁচাতে আমার স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আহত হন। আমাদের এক সন্তানও আহত হয়েছে।’ বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়রের স্ত্রী পা ভেঙে ফেলেছেন।

গত ২৭ জুন মঙ্গলবার রাজধানী প্যারিসের উপশহর নানতেরে ট্রাফিক আইন অমান্যের অভিযোগে নাহেল এম নামের এক অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণকে গাড়ি থামাতে বলেছিল পুলিশ; কিন্তু সেই নাহেল সেই নির্দেশ না মানায় এক পুলিশ সদস্য তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে এবং তাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় নাহেল।

তার মৃত্যুর পর থেকেই বিক্ষোভ দানা বাঁধছিল নানতেরে। এই দিন বিকেলের দিকে নাহেলের মা মৌনিয়া এক ভিডিওতে তার ছেলেকে হত্যাকারী পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করেন। ফ্রান্সের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়। তার ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। নাহেল ও তার মা আলজেরীয় বংশোদ্ভুত এবং মুসলিম।

ইতোমধ্যে সেই সেই বিক্ষোভ রূপ নিয়েছে দাঙ্গায়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ দিনে ফ্রান্সের অন্তত ১০টি শপিং মল, ২০০ সুপারমার্কেট, ২৫০টি তামাকজাত পণ্যের দোকান, ২৫০টি ব্যাংক এবং শত শত সরকারি ভবনে হামলা-ভাঙচুর ও লুটাপাট চালিয়েছে বিক্ষোভকারীর।

পুলিশের ওপর হামলা, নাশকতা ও লুটপাটের অভিযোগে শনিবার রাতজুড়ে রাজধানী প্যারিস ও অন্যান্য শহর থেকে মোট ৭১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আগের দিন শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৩০০ বিক্ষোভকারীকে।

দাঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। সাঁজোয়া যান ও হেলিকপ্টার টহলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে উসকানিমূলক ভিডিও ও সংবাদ প্রকাশ না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

নাহেলের মা মৌনিয়া ফ্রান্সের একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি কেবল তার ছেলের হত্যাকারী পুলিশ সদস্যের বিচার চান। ফ্রান্সের পুলিশবাহিনীর ওপর তার কোনো ক্ষোভ নেই।

কিন্তু বিক্ষুব্ধ দাঙ্গাকারীদের কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

সূত্র : সিএনএন, বিবিসি, এএফপি

এসএমডব্লিউ

খুলনা গেজেট/এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!