শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সরু এক গলি দিয়ে রংপুর মহানগরীর মাস্টার পাড়ার বাড়িতে হাজির হয়েছেন ৮ দিন ধরে নিখোঁজ ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। এ সময় তার পরনে ছিল আকাশী রঙের গেঞ্জি, পায়জামা আর মুখে ছিল মাস্ক। কিন্তু ত্ব-হা সে সময় কোনো কথা বলেননি। মুখে আঙুল দিয়ে চুপ থাকতে বলেন। খোকন নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এই রিপোর্ট লেখার সময় আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী বিপ্লব মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘একাই ঢুকছিল।’ত্ব-হা তখন কোন পোশাকে ছিলেন, তার বর্ণনা দিয়ে বিপ্লব বলেন, ‘খালি শুধু একটা হাফ হাতা গেঞ্জি আর পায়জামাটা আর মাস্ক পরা ছিল। আর কোনো কিছু ছিল না।’
ত্ব-হাকে বিল্পব যখন দেখেন, তখন বেলা সাড়ে ১২টা। বিপ্লব ওই এলাকারই বাসিন্দা। ত্ব-হার শ্বশুর বাড়ি ঢুকেন পেছনের দরজা দিয়ে।
বিপ্লব বলেন, ‘সাড়ে ১২টার দিকে এখানে নামি আমার গলির দিকে আসছে। ওনার বাড়ির পেছনে একটা দরজা আছে। পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকছে।’
ত্ব-হাকে দেখে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মো. খোকন। তিনি তার শ্বশুর বাড়ি পর্যন্ত যান। জানান, ত্ব-হাকে দেখে তিনি যখন প্রশ্ন করেন, তখন জবাব পান- ‘এখন কিছু বলতে পারব না।’
খোকন বলেন, ‘আমি দেখলাম আমার বাড়ির সামনে দিয়া আসতেছে। তখন আমি কামের মধ্যে ছিলাম। তাকে বললাম, কী ব্যাপার, আপনি এদিক থেকে যাইতেছেন?’
মুখে আঙ্গুল রেখে ত্ব-হা কী ইশারা করেছেন, সেটি বুঝিয়ে তিনি বলেন, ‘তখন তিনি বলেন, চুপ কর, চুপ কর। কোনো কথা হবে না। পরে আলাপ হবে। ‘এই কথা বলে, তখন তিনি চলে গেলেন।’
সেখানে থেমে না থেকে উৎসুক হয়ে ওঠা খোকন চলে যান ত্ব-হার শ্বশুরবাড়ি। তবে সেখানে গিয়েও তিনি তার প্রশ্নের জবাব পাননি।
খোকন বলেন, “আমি কিছু বললাম না (ত্ব-হার বক্তব্য শোনার পর)। তখন আমি ওনার বাসায় (শ্বশুর বাড়ি) গেলাম। যাওয়ার পরে ওনার শালি বলল, ‘এখন কোনো কথা বলবে না। কালকে ব্রিফিং হবে তখন তিনি কথা বলবে’।”‘এই পর্যন্তই আমি ছিলাম। পরে আমি চলে আসলাম’- বলেন খোকন।
ত্ব-হা ছিলেন একজন ক্রিকেটার। তবে গত কয়েক বছরে ধর্মে ঝুঁকে পড়েন। আর খেলাধুলা ছেড়ে এক পর্যায়ে ইসলামের নানা দিক নিয়ে বক্তব্য দিতে থাকেন।
গত ৮ জুন থেকে ত্ব-হাসহ চারজন নিখোঁজ হন। কোথা থেকে কীভাবে নিখোঁজ হন এমন তথ্য দিতে পারছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।