শিগগিরই আরেক দফা বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম। এমন আভাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলছেন, এখন আর মোটা ভর্তুকি টানার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই সরকারের।
গরমে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ মিলবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জ্বালানির দাম চড়া থাকলে সেই সুযোগও কম। এদিকে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তেল-গ্যাস বিক্রিতে লাভে রয়েছে সরকার। তাই উচিত হবে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে সমন্বয় করা।
দেশে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার মধ্যে অর্ধেকই গ্যাসভিত্তিকই। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে ওই সব কেন্দ্রের জন্য গ্যাস কিনতে হবে ১৪ টাকা প্রতি ঘনমিটার। যা এক লাফে বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ।
পিডিবির হিসাবে, বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় ৯ টাকার মতো। কিন্তু গ্যাসের নতুন দাম কার্যকর হলে ইউনিটপ্রতি খরচ বাড়বে অন্তত ১ টাকা। ফলে সেই বিদ্যুৎ কিনতে পিডিবির বাড়তি ব্যয় হবে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। আর তা সমন্বয়ের প্রধান পথই ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ানো।
জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীরও একই মত। এই বিষয়ে সরকার সময়ও নিতে চায় না খুব বেশি বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, আমরা ধাপে ধাপে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতে চাই। আমাদের কিছুই করার নেই। মানুষের কষ্ট হবে জানি। একটু সহ্য করতে হবে। সরকারের হাতে আর কোনো অপশন নেই।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ম তামিম বলেন, সরকার তো সবসময়ই ভর্তুকি দিয়েছে। কিন্তু দেশের অর্থনীতি যখন শোচনীয় অবস্থায় তখন ভর্তুকি উঠিয়ে নেয়ার কোনো মানে খুঁজে পাচ্ছি না। মূল্যস্ফীতির এই চরম সময়ে সরকারের আরও বেশি ভর্তুকি দেয়া উচিত। অথচ ঘটছে তার উল্টো।
প্রশ্ন হলো, সরকারের হাতে বিকল্প নেই কেন? নতুন করে দাম বাড়ানোর পর ভর্তুকি দিতে হবে না গ্যাস বিক্রির বিপরীতে। জ্বালানি তেলের বাণিজ্যেও অনেকদিন ধরে মুনাফা করছে বিপিসি। একমাত্র বিদ্যুতেই লোকসান যাচ্ছে সরকারের। সেটির দামও ৫ শতাংশ বেড়েছে সম্প্রতি। তাহলে কেন এতটা তোড়জোড়?
বিশ্লেষকদের মতে, গ্রীষ্মকালে ১৬ মেগাওয়াটের চাহিদা পূরণে দ্রুত আমদানি বাড়াতে হবে গ্যাস, কয়লা ও তরল জ্বালানির। যে কারণে আর্থিক সঙ্কট কাটাতেও আগাম প্রস্তুতিতে যেতে চাইছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এ বিষয়ে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী আরও বলেন, আমাদের তিনটি প্যারামিটার। একটি হলো জ্বালানির দাম কি হচ্ছে না হচ্ছে। আরেকটি হলো ভর্তুকি কতটুকু দেয়া যাবে না যাবে। আর শেষ ধাপ জনগণের ওপরে কি গিয়ে বর্তাবে। আমাদের কিছুই করার নেই।
বর্তমানে ১০ হাজার মেগাওয়াটের নিচে চাহিদা থাকলেও তা উৎপাদনে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিয়মিত। ফলে লোডশেডিংও হয়ে উঠেছে নিয়মিত ঘটনা।
সূত্র : চ্যানেল ২৪
খুলনা গেজেট/ এসজেড