ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারী কলেজের শিক্ষার্থীরা ডিভিএম ডিগ্রিসহ ৬দফা দাবি নিয়ে ৯৪ দিন ধরে আন্দেলনে রয়েছে। এরমধ্যে অবস্থান কর্মসূচীসহ ক্লাস বর্জন এবং ঝিনাইদহ -চুয়াডাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে।
সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ব্যানারে এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ৬টি দাবি জানায়। সড়ক অবরোধের সংবাদ শুনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবগত করে দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে ছাত্রদের অবরোধ প্রত্যাহার করান। এসময় তারা সড়কে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে নিয়ে অডিটোরিয়াম ভবনে তাদের দাবির পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( শিক্ষা ও আইসিটি) রথীন্দ্রনাথ রায়, কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম শাহীন, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা ও ভেটেরিনারী কলেজের আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক- কর্মচারীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষক ও কারিগরী যন্ত্রপাতির সল্পতা নিয়ে চলছে। শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রজেক্ট বাতিল হওয়ায় ডিভিএম কোর্স সনদের অনুমোদন বিড়ম্বনায় পড়েছে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা। অধ্যক্ষ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেও শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে কোন সাড়া মেলাতে পারেননি। চাকুরির অনিশ্চয়তায় সেখানে শিক্ষরাও থাকতে চান না। কর্মকর্তাদের বাধ্য হয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ভেটেরিনারী কলেজ সরকারের ৫টি বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের দাবির কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমের এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, এই কাজ একজন এমপি সহজে করতে পারেন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করে। তার পরেও আমি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করবো সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য। ছাত্রছাত্রীদের দাবি ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে ডিভিএম ডিগ্রি প্রদানের কথা বলা হলেও তাদের কোর্স পরিবর্তন করা হয়েছে। অত্র কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত কাজ না করে অন্য কলেজ থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে। ভর্তি ফি অতিরিক্ত বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষক সংকট রয়েছে, বোর্ড পরীক্ষা শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত হয় এবং প্রতিষ্ঠানে আধুনিক কোন যন্ত্রপাতি নেই। তাদের দাবি অচিরেই এই সমস্যা গুলোর সমাধান করা হোক। আলোচনা সভায় কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি সাইফুজ্জামান মুরাদ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ সজীবুল হাসান এই দাবি গুলো তুলে ধরেন।
আলোচনা সভায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কোন প্রতিনিধি কলেজ পরিদর্শনে এসে ছাত্রদের এসব দাবির কথা শোনেন নি। একারণে ছাত্রদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একবার কলেজে এসে তাদের কথা শোনা উচিত ছিল।