ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে নিয়ে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারে আরও যাঁরা ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান। দুর্ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানকে নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।
গাজা যুদ্ধ ঘিরে গত কয়েক মাসে ইরানের কূটনৈতিক তৎপরতায় নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আব্দোল্লাহিয়ান। বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক ও ফোনালাপ করছিলেন তিনি। মিত্র ছাড়াও পশ্চিমা দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আসছিলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইরানে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনি। এ রকম এক রাষ্ট্রব্যবস্থায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন আব্দোল্লাহিয়ান। যদিও ইরানে পররাষ্ট্রনীতির ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব রাখে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)।
একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক হিসেবে কয়েক দশক ধরে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন আব্দোল্লাহিয়ান। আইআরজিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার কারণে তিনি সমধিক পরিচিত। আইআরজিসির সাবেক প্রধান জেনারেল কাশেম সোলাইমানিরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
২০২১ সালে ইব্রাহিম রাইসি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে আব্দোল্লাহিয়ানকে প্রায় বিভিন্ন দেশ সফরে যেতে দেখা গেছে। তাঁর এসব বিদেশ সফরের লক্ষ্য ছিল, ইরানকে একঘরে করে রাখা ঠেকানো। পাশাপাশি তেহরানের ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মোকাবিলা করা।
রোববার আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধন শেষে হেলিকপ্টারে ফেরার পথে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরে এখনো হেলিকপ্টারটির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে হেলিকপ্টার থেকে আসা এক জরুরি ফোনকলে। হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারা ওই ফোনকল করেছিলেন। তবে কথা শেষ হওয়ার আগেই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। তবে ওই এলাকায় বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় যুক্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশার কারণে ওই এলাকায় পাঁচ মিটারের বেশি দূরত্বে কিছু দেখা যাচ্ছে না।