প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর ফিতরা সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা আদায় ফরয। নেছাব পরিমাণ (সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ তোলা রুপার সমপরিমাণ) সম্পদের মালিক হলে ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে গরিবদের মধ্যে ফিতরা বিতরণ করতে হয়। খোদ রাসুল (সা.) এ বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন। মূলত ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের জামায়াতের আগেই এটি আদায় করতে হয়।
ইবনু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রত্যেক গোলাম, আযাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্তবয়স্ক, অপ্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের উপর রাসুল (সা.) সাদাকাতুল ফিতর হিসেবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক সা’ পরিমাণ আদায় করা ফরয করেছেন এবং লোকজনের ঈদের সালাতে (নামাযে) বের হওয়ার পূর্বেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি: ১৫০৩, ১৫০৯)
অপর হাদিসে এসেছে, আবূ সা’ঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা এক সা’ পরিমাণ খাদ্য অথবা এক সা’ পরিমাণ যব অথবা এক সা পরিমাণ খেজুর অথবা এক সা পরিমাণ পনির অথবা এক সা পরিমাণ কিসমিস দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করতাম। (সহিহ বুখারি: ১৫০৬)
এছাড়া ইবনু উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন সালাতের উদ্দেশ্যে অতি ভোরে রওনা হওয়ার আগেই (যাকাত-ফিতরা) আদায় করে দিতে নির্দেশ দিতেন। (তিরমিজী: ৬৭৪) হাদিসে পাঁচটি জিনিস দ্বারা সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের কথা এসেছে। সেগুলো হলো- গম, যব, কিসমিস, খেজুর, পনির। এসবের মধ্যে গমের পরিমাপ হলো অর্ধ সা আর বাকিগুলোর পরিমাপ এক সা। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী যেকোনো একটি দিয়ে যে কেউ ফিতরা আদায় করতে পারবেন।
এদিকে, চলতি বছর ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
গম বা আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ১১৫ টাকা প্রদান করতে হবে, যব দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ৪০০ টাকা, কিশমিশ দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ২ হাজার ১৪৫ টাকা, খেজুর দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ২ হাজার ৪৭৫ টাকা ও পনির দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ২ হাজার ৯৭০০ টাকা ফিতরা প্রদান করতে হবে।
খুলনা গেজেট/ এএজে