ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় নিরাপরাধ দুই ভাইকে নির্মমভাবে হত্যায় জড়িতদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানিয়েছে খুলনা জেলা ইমাম পরিষদ। বুধবার(২২মে) খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই দাবি জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেনার ডুমাইন ইউনিয়নের পক্ষগরীতে মন্দিরে আগুন দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে ইউনিয়নের একজন মেম্বারের নেতৃত্বে শ্রমিক আশরাফুন এবং আরশাদুল দুই ভাইকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় সারাদেশেই উত্তেজনা তৈরি হয় এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওযায় আশংকা দেখা দেয়।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. সিদ্দিক আলীর নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি দুই ভাই জড়িত থাকার প্রমাণ পায়নি। বরং স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যান জড়িত বলে প্রমাণ পায়।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। এ ধরনের অপরাধীরা যদি শাস্তি না পায় তাহলে এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা বাড়তে থাকবে। রাষ্ট্রে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হবে, মানুষ আইন হাতে তুলে নিবে। সুতরাং কোন অবস্থাতেই এই ঘটনাকে সহজভাবে দেখার সুযোগ নাই।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইতিপূর্বে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু জনগোষ্ঠী নিজেরা তাদের মন্দিরে আগুন লাগিয়ে এবং মূর্তি ভেঙ্গে মুসলমানদের উপর দোষ চাপাবার অপচেষ্টা করেছে, যেটা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে এই গোষ্ঠীর আসল উদ্দেশ্য বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দেওয়া। এর মধ্য দিয়ে মূলত একটি গোষ্ঠী ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের সচেতন ওলামায়ে কেরাম এবং মসজিদসমূহের ইমামগণ দেশের সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের এই অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে দেবে না। আমরা সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে, স্বাধীনভাবে সকল ধর্মের মানুষেরা যার যার ধর্ম পালন করবে এ বিষয়ে দেশের আলেম সমাজ এবং ইমাম সমাজ সব সময়ই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তি বিরাজমান। যা বিশ্বের জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজকে উগ্র কিছু হিন্দু জনগোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশে সেই সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে চলেছে, যা কখনো আমরা মেনে নেব না। এজন্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি অবিলম্বে এই জঘন্য কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে