বাগেরহাটের ফকিরহাটে দুই তরুণীকে আটকে রেখে গণধর্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান আসামি মেহেদী হাসান (২০) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬। মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ জেলা থেকে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব-৬ এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন ভাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেহেদি হাসান গণধর্ষণ এর সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি (শনিবার) বিকালে ভিকটিম দুই তরুণী তাদের চাচাতো ভাই ও তার বন্ধুর সাথে দুটি মোটরসাইকেল যোগে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় ঘুরতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে অনুমান রাত ১১টার দিকে চা পানের জন্য তারা বাগেরহাট শহরতলির হজরত খানজাহান (রহ.)-এর মাজার মোড়ে যান। মাজার এলাকা থেকে রাতে তারা খুলনার দিকে রওনা দেন। পরে ফকিরহাটের জারিয়া চৌমাথা এলাকায় গতিরোধক অতিক্রম করার সময় ছাত্রলীগ নেতা শাকিল সরদার এক তরুণীর ওড়না টেনে ধরেন। এতে ভিকটিম ও তার বন্ধু মোটরসাইকেল থেকে রাস্তার ওপর পড়ে যান। বিষয়টি দেখতে পেয়ে অন্য মোটরসাইকেলে থাকা ভিকটিমের চাচাতো ভাই ও অপর তরুণী মোটরসাইকেল থেকে নেমে যান। মোটরসাইকেল থেকে নামার পর কোনো কিছু জানতে চাওয়ার আগেই আসামী শাকিল ও মেহেদী তাদের মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আসামী শাকিলে এক তরুণীকে প্রথমে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে এবং আসামী মেহেদী অপর ভিকটিম তরুণীকে আধাপাকা টিন সেড দোকানের পিছনে বাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৩টার দিকে দ্বিতীয় দফায় আসামি মেহেদী ভিকটিম তরুণীকে চায়ের দোকানে এবং তৃতীয় দফায় আসামি শাকিল অপর তরুণীকে জাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। এ সময় আসামি শাকিল ও মেহেদী বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছে থাকা টাকা এবং স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন। আসামীদ্বয় ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে ভিকটিমের বন্ধুসহ তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে ভিকটিম তরুণী বাদী হয়ে এই জঘন্য ও নিকৃষ্ট কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানায় গণধর্ষণের মামলা দায়ের করে। এমন নেক্কারজনক, জঘন্য ও ঘৃণিত গণধর্ষণের বিষয়টি বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার একটি আভিযানিক দল ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের সাথে জড়িত আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে।
খুলনা গেজেট/এনএম