খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ প্রদান শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। পর্যায়ক্রমে এই অন্যান্য জুট মিলেও এ অর্থ প্রদান করা হবে। উদ্বোধন করবেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
প্লাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান ও বিজেএমসির সমন্বয়কারী মোঃ গোলাম রব্বানী জানান, সোমবার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় প্লাটিনাম জুট মিলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে খুলনা জোনের রাষ্ট্রায়ত্ত ৭টি পাটকলের শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এদিন প্লাটিনাম জুট মিলের ৩০ জন শ্রমিকের সঞ্চয়পত্রের কাগজপত্র, ব্যাংক একাউন্ট নগদ টাকা প্রদানের স্লিপসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করা হবে।
জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের অবসরপ্রাপ্ত ও অবসানকৃত মোট ৩ হাজার ৮৩৬ জন স্থায়ী শ্রমিকের পাওনা অর্থ প্রদান করা হবে। এছাড়া বদলী শ্রমিকদেরও মজুরি কমিশনের অর্থ প্রদান করা হবে।
বিজেএমসি সূত্রে জানা যায়, পাটকল শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ), গ্র্যাচুইটি, গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ সমুদয় পাওনার ৫০ শতাংশ নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে এবং বাকি ৫০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধ করা হবে। এরই মধ্যে শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বিজেএমসির হাতে পৌঁছেছে। একই সাথে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর করিম জুট মিলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
বিজেএমসির সূত্রটি জানায়, খুলনা জোনের সাতটি পাটকলের ৩৬ হাজার ৩৯৫ জন অবসরপ্রাপ্ত, অবসায়নকৃত ও বদলী শ্রমিকদের গ্রাইচ্যুটি, গোল্ডেন হ্যান্ডশেক, পিএফ, মজুরি কমিশনের বকেয়া, মৃত্যুদাবী, ছুটি নগদায়ন ও বকেয়া মজুরি বাবদ পাওনা রয়েছে ১ হাজার ৬৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এসব খাতের মধ্যে বদলী শ্রমিকদের শুধুমাত্র মজুরি কমিশনের বকেয়া অর্থ প্রদান করা হবে।
পাটকলগুলোর মধ্যে আলীম জুট মিলের ১ হাজার ৭৪৪ জন শ্রমিকের ১০৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, কার্পেটিং জুট মিলের ১ হাজার ১১৪ জনের ৬৭ কোটি ২ লাখ টাকা, ক্রিসেন্ট জুট মিলের ১১ হাজার ১৯ জনের ৪৬৩ কোটি ৪ লাখ টাকা, ইস্টার্ণ জুট মিলের ২ হাজার ৬৭২ জনের ১৩২ কোটি ৪১ লাখ টাকা, জেজেআই জুট মিলের ৩ হাজার ৪৫২ জনের ১৭১ কোটি ৩ লাখ টাকা, প্লাটিনাম জুট মিলের ১০ হাজার ১০১ জনের ৪৫৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা এবং স্টার জুট মিলের ৬ হাজার ২৯৩ জন শ্রমিকের ২৮২ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ গোলাম রব্বানী জানান, অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাথমিক হিসাবে ১৬৭৭ কোটি টাকা পাওনার হিসাব করা হয়েছে। তবে শ্রমিকদের নির্ভূলভাবে তাদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। সেই কারণে দফায় দফায় হিসাব-নিকাশ করা হচ্ছে। ফলে বর্তমান হিসাবের কিছুটা থেকে অর্থ কম-বেশি হতে পারে।