খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

প্রেসিডেন্টের সংলাপে যাবে না ইসলামী আন্দোলন

গেজেট ডেস্ক

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। চলমান এ সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শনিবার দুপুরে পুরানা পল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংলাপে অংশ না নেয়ার কথা জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের প্রধান যখন কোন সংলাপের আমন্ত্রণ জানান, তখন তাতে সাড়া দেয়া নাগরিক দায়িত্ব বোধের অংশ হয়ে দাঁড়ায়। এই বোধ থেকেই আমরা ২০১২ ও ২০১৭ সালের সংলাপে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু তিক্ত সত্য হলো, আমরা চরমভাবে হতাশ হয়েছি। গত দুই কমিশনের অধীনে যে দুটি জাতীয় নির্বাচন হয়েছে এগুলো এতটাই বিতর্কিত ও জালিয়াতিতে পূর্ণ যে, তা জাতি হিসেবে আমাদেরকে চরম হতাশ, বিব্রত ও লজ্জিত করেছে।

চরমোনাই পীর বলেন, হতাশাজনক ব্যাপার হলো, এই ইসির নিয়োগকর্তা মহামান্য প্রেসিডেন্ট এসব কলঙ্কময় নির্বাচনের দায়ে তারই গঠিত কমিশনকে কোনরকম জবাবদিহিতার আওতায় আনেননি। কোন রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ফলে প্রেসিডেন্টের সাথে সংলাপকে আমাদের কাছে অর্থহীন বলে মনে হয়।

তাছাড়া অতীতের দুটি সংলাপে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে প্রেসিডেন্টের কাছে আমাদের গঠনমূলক প্রস্তাবগুলোর কোনটাই মূল্যায়ন করা হয়নি। যে দল তাকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত করেছে, তিনি সেই দলীয় স্বার্থের বাইরে যেতে পারেননি।

মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মহামান্য প্রেসিডেন্ট সংলাপ নিয়ে দেশের চিন্তাশীল মহল, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাধারণ জনগণের মাঝে আমরা কোন আগ্রই দেখতে পাচ্ছি না। বরং জনগণ মনে করছে, প্রেসিডেন্টের সংলাপে ফলপ্রসূ কিছু হবে না। অতীতের দুটি সংলাপ যেমন জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, চলমান সংলাপেও এর ব্যতিক্রম কিছু হবে বলে জনগণ মনে করে না। অতএব, জনআকাঙ্খার বিপরীতে গিয়ে এমন একটি আবেদনহীন ও তাৎপর্যহীন সংলাপে অংশ নেয়াটা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সঙ্গত মনে করে না।

তিনি আরো বলেন, ফলপ্রসূ সংলাপ হতে হলে সংলাপের বিষয়বস্তু পরিবর্তন করতে হবে। দেশবাসী মনে করে, নির্বাচন কমিশন গঠন নয় বরং সংলাপ হওয়া উচিৎ নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো নিয়ে। দেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কিভাবে হবে, তা নিয়ে সংলাপ হওয়া উচিৎ।

এ সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কিছু প্রস্তাবনা দেয়া হয়।

প্রস্তাবনাগুলো হলো-

১. নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করতে হবে।

২. নির্বাচনের সময় অবশ্যই অন্তবর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।

৩. ইসি আয়োজিত প্রতিটি নির্বাচনের পরে কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচন ও ইসির মূল্যায়ন করতে হবে। নির্বাচনে কোন ধরনের অসততা, অদক্ষতা ও পক্ষপাত পাওয়া গেলে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের অপসারণের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

৪. জন প্রশাসন, আইন, স্বরাষ্ট্র ও তথ্যমন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কালীন নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত করতে হবে।

৫. নির্বাচন কমিশনের বাজেট, সচিবালয় ও পরিচালনা নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করে দিতে হবে।

৬. নির্বাচন কালীন সহিংসতার প্রতিটি অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ইসিকেই নিতে হবে।

৭. সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাউকে কাউকে দলীয় লেজুড়বৃত্তি করতে দেখা গেছে। যাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠে তাদেরকে চিহ্নিত করে স্থায়ীভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!