প্রেমের টানে রাতের আঁধারে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে ভারতের এক কিশোরী। প্রেমিককে খুঁজে না পেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছিল সে। তা দেখে এক জন নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন ওই মেয়েকে। এ দিকে প্রেমিকার সীমান্ত পেরিয়ে দেশে চলে আসার খবর শুনে খোঁজখবর শুরু করতে করতে থানায় পৌঁছায় প্রেমিক। সেখানেই দেখা হয় দুজনের। যদিও সেই দেখা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে বৈঠকের পর তাকে মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আদতে উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর থানার হরিয়ানা গ্রামের বাসিন্দা ১৭ বছরের নাবালিকার সঙ্গে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গির বাসিন্দা ২১ বছরের আব্দুল লতিফ ওরফে রকিবের প্রেম। এত দিন কোনোভাবে সেই সম্পর্ক গড়ালেও, দেখা হয়নি। তাই প্রেমের মাস ফেব্রুয়ারিতে, কিশোরী স্থির করে, দেখা করতে হবে প্রেমিকের সঙ্গে। যেমন ভাবা, তেমন কাজ।
গত বুধবার রাতে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মুড়িখাওয়া সীমান্ত হয়ে পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে ওই কিশোরী। সীমান্ত পার হয়ে শুরু হয় প্রেমিকের খোঁজ করা।
হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখে তেতুঁলিয়ার সর্দার পাড়া গ্রামের হাসিনুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ওই মেয়েকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। খবর যায় থানাতেও। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসিনুরের বাড়ি থেকে নাবালিকাকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এ দিকে, প্রেমিকা এসেছে জেনে প্রেমিক রকিবও তেঁতুলিয়া থানায় ছুটে আসে। দেখা হয় দুই জনের।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সায়েম মিঁয়া বলেন, আমরা খবর পাই, সর্দার পাড়ায় একটি বাড়িতে এক ভারতীয় মেয়ে আছে। আমরা সর্দার পাড়া থেকে তাকে থানায় নিয়ে আসি। বিজিবিকে জানাই। বিকেলে বিজিবি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে জিরো লাইনে পতাকা বৈঠক করে। ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে ঠিক হয়, ওই মেয়েকে তার মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় বিএসএফর হাতে ওই মেয়েকে তুলে দেওয়া হয়। নাবালিকার বাবা-মা সেখানে এসেছিলেন। বাবা বলেন, ভুলবশত মেয়ে বাংলাদেশে চলে গিয়েছে। তাকে ফিরে পেয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ।
যদিও এখনই মেয়েকে হাতে পাচ্ছেন না তার মা-বাবা। নাবালিকাকে বিএসএফ তুলে দেবে রাজ্য পুলিশের হাতে। রাজ্য পুলিশ তার পর নাবালিকাকে মা-বাবার হাতে তুলে দেবে।