নগরীতে প্রি-পেইড মিটার রিচার্জে ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রাহকরা। রিচার্জের মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে রিচার্জ এজেন্টের বিরুদ্ধে। এদিকে বিভিন্ন পেমেন্ট সার্ভিস দেওয়ার জন্য ‘জি-পে’ নামে যেই এ্যাপসটি রয়েছে তা খুলনাঞ্চলে বেশিরভাগ সময়েই অকেজো থাকে। অর্থাৎ নেটওয়ার্ক না থাকায় কাজ করে না এ্যাপসটি। যার ফলে সাধারণ গ্রাহকরা বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে প্রি-পেইড মিটারে রিচার্জ করতে এজেন্টদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এদিকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশনের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রি-পেইড মিটারের যেমন আগে ভাড়া দেওয়া লাগত না কিন্তু সম্প্রতি প্রতি মাসেই রিচার্জের সময় অটোমেটিক ভাবে ভাড়া নেওয়া শুরু হয়েছে। শুধু ভাড়াই নয় ভাড়ার সাথে ভ্যাট, ডিমান্ড চার্জ তো আগেই ছিল। এর ওপর আবার নতুন করে শুরু হয়েছে রিচার্জে অতিরিক্ত ফি। প্রি-পেইড মিটারের রিচার্জ করতে আগে এজেন্টদের অতিরিক্ত টাকা না দেওয়া লাগলে সম্প্রতি গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, বিভিন্ন ভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে এজেন্টরা এসব অতিরিক্ত টাকা নেওয়া শুরু করেছে। যা প্রতি ৪’শ টাকার নিচে অতিরিক্ত পাঁচটাকা, ৪’শ থেকে ১৪৯৯ টাকা পর্যন্ত দশ টাকা, ১৫’ থেকে সাড়ে ৩ হাজার পর্যন্ত পনের টাকা এবং এর বেশি রিচার্জ করলে ২০ টাকা দেওয়া লাগবে। প্রতিবার মিটারে রিচার্জ করার সময় এই টাকা গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। যা অনেকটা মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।
নগরীর নিউমার্কেট এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ জানান, প্রি-পেইড মিটারের রিচার্জ এখন বড় একটি সমস্যা হয়ে পড়েছে। এর রিচার্জের জন্য ব্যাংক, ওজোপাডিকোর বুথ, জি-পে এ্যাপস এবং জি-পে’র এজেন্টের কাছে নির্ভর করতে হয়। ব্যাংক ও বুথ অনেক দূরে হওয়ায় সাধারণ মানুষ নিজের মোবাইলে জি-পে এ্যাপসটি ব্যবহার করে। সেখানকার একাউন্টে টাকা রেখে প্রয়োজনমত মিটারে রিচার্জ করে নেয়। কোন ধরনের অতিরিক্ত ফি ছাড়াই। কিন্তু সম্প্রতি এ্যাপসিটে ঠিকমত কাজ করছে না। বেশিরভাগ সময়েই নেটওয়ার্কিং সমস্যা থাকে।
নগরীর আড়ংঘাটার বাসিন্দা করিম হোসেন জানান, বাসা থেকে ব্যাংক ও বুথ অনেক দূরে। তাই এ্যাপস ব্যবহার করতাম। কিন্তু তাতে নিয়মিত সমস্যা লেগেই থাকে। যার ফলে নিকটস্থ জি-পে’র এজেন্টদের কাছ থেকে মিটারে টাকা রিচার্জ করি। কিন্তু সম্প্রতি এজেন্টরা রিচার্জের মূল্যের থেকে বেশি টাকা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি ৫’শ টাকা রিচার্জ করতে গেলে আমার কাছ থেকে ১০ টাকা বেশি নেয়। এদিকে প্রতি মাসে রিচার্জের সময় ডিমান্ড চার্জ, মিটার ভাড়া, ভ্যাট তো আগেই কাটত। যার ফলে এমনও হয় যে, ৫১০ টাকার রিচার্জ করে মিটারে যোগ হয় ৩৮০ টাকা ।
এ ব্যাপারে ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লি: এর প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো: আবু হোসেন জানান, জি-পে’র এ্যাপসে মাঝে মাঝে নেটওয়ার্কের সমস্যা হতে পারে। তবে রিচার্জ করার সময় এজেন্টরা অতিরিক্ত টাকা নেওয়াটা কতটা যৌক্তিক সেটা দেখার জন্য দু’জন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংক ও ওজোপাডিকোর বুথে রিচার্জের সময় অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হয় না। জি-পে’র নেটওয়াকিং সমস্যা এবং এজেন্টের অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি।
খুলনা গেজেট / এনআইআর