খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বিএনপি। দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় মেয়র পদে বিএনপির কেউ প্রার্থী হচ্ছেন না। দলের এমন শক্ত অবস্থানের মধ্যেও বিএনপি সমর্থিত বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলররা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কাউন্সিলররা বলছেন, পরিস্থিতি বুঝে সবার সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন তারা।
আগামী ১২ জুন দ্বিতীয় ধাপে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে ১৬ মে। গত ৩ এপ্রিল কেসিসি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের নানান তৎপরতা চলছে।
ইতোপূর্বে কেসিসি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরাই বেশি জয় পেয়েছেন। সর্বশেষ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত অনেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তারা এবার আওয়ামী লীগ থেকেই মনোনয়ন চাইছেন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলররা ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু দলের ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত এবং ভোটের পরিবেশ নিয়ে কেমন থাকে- তা বুঝতে না পারায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক কাউন্সিলর প্রার্থী জানান, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় সিদ্ধান্তের চাইতে বড় প্রতিবন্ধকতা ভোটের পরিবেশ। কাউন্সিলর নির্বাচনে দলের প্রভাব কম থাকে। অতীতে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েও বিজয়ী হয়েছেন অনেকে। এজন্য ভোট সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের ঝুঁকি নিতে চান তাদের কয়েকজন। কিন্তু ভোটের পরিবেশ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সবাই।
নগরীর ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শমসের আলী মিন্টু বলেন, প্রতিদিনই আমি কাউন্সিলর অফিসে থাকি, মানুষের জন্য কাজ করি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি আমার রয়েছে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি অনেক ভিন্ন। নির্বাচনে অংশ নেব কিনা এটা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
কেসিসির ১৯নং ওয়ার্ডে ৩ দফায় কাউন্সিলর হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন আশফাকুর রহমান কাকন। তিনি বলেন, প্রতিদিনই মানুষের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। আমি ১৫ বছর ধরে কাউন্সিলর, আলাদা করে প্রস্তুতির কিছু নেই। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এরপর সিদ্ধান্ত নেব।
১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান মনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে। এবিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করবো না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. ফারুক হিল্টন, ২৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কে এম হুমায়ুন কবীর, ২২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. মাহাবুব কায়সার, ২৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ওয়াহেদুর রহমান দিপু, ২৯ নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর মো. গিয়াসউদ্দিন বনির নির্বাচনী প্রস্তুতি রয়েছে। কিন্তু সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ ও বিএনপি নির্বাচনে না গেলে তারা কেউ নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়েছেন।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে যাবে না। এজন্য বিএনপি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবে না। দলের কোনো নেতা প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/হিমালয়