পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন ছেড়ে প্রবাসে এক বিবর্ণ ঈদ। অন্যদিকে সারা পৃথিবী মহামারীর কালো থাবায় একরকম স্থবির। সাথে যোগ হয়েছে ফিলিস্তিনি সাধারণ মুসলমানদের উপর ইসরায়েলি বর্বর আগ্রাসন। সবকিছু মিলিয়ে প্রতি মূহুর্তে মনটা একদমই বিষিয়ে উঠছে।
নিরস্ত্র মানুষের উপর নির্বিচারে বিমান হামলার পর মধ্যযুগীয় কায়দায় স্থল পথে আক্রমণ। দুনিয়ার মুসলিম/অমুসলিম বেশিরভাগ দেশসহ জাতিসংঘের নীরবতা আর নির্বিচারে মানুষ হত্যার উসকানিদাতা মোড়লের লজ্জাহীন উল্লাস আর উলঙ্গ সমর্থন দেখে মনে প্রশ্ন জাগে করোনা মহামারী কি কোন শিক্ষাই আমাদের দেয়নি?
কর্মসূত্রে মুসলিম জাহানের সবচেয়ে প্রিয় ভুমি সৌদি আরবে আমার বর্তমান অবস্থান। আমি ভাবি ঈদের মূলমন্ত্র মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা ও সহানুভূতি প্রদর্শনসহ অহংবোধ, হিংসা, ক্ষোভ, ক্রোধ পরশ্রীকাতরতা ঝেড়ে ফেলা। এ মূহুর্তে কোথাও, কোনো দেশে কি এসবের লেশমাত্র আমরা দেখতে পাই? দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এ প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত “না”।
সম্প্রতি আমার তত্ত্বাবধানে একজন ফিলিস্তিনি ছাত্র পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করেছে। আমি তার গবেষণাকালীন পুরো সময়ে দেখেছি তার চোখে মুখে দেশে থাকা মা/বাবা আত্মীয় স্বজনদের নিরাপত্তা নিয়ে অবর্ণনীয় শংকা। গতকাল ঈদের দিনে আমি তাকে ফোন করেছিলাম এই ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে তার আত্মীয় পরিজনদের খবর নিতে। যে কয় মিনিট কথা হলো তার পুরোটা সময়ই সে একভাবে কাঁদতেছিল। কিভাবে, কি বলে তাকে সান্ত্বনা দেবো সে ভাষাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ঈদের দিনে মনটা একদমই বিষিয়ে উঠলো।
আল্লাহ্ এ নিরপরাধ জনগোষ্ঠীর হেফাজত করুন। জাতিসংঘসহ বিশ্ব বিবেক, বিশ্ব মানবতা জাগ্রত হোক। চলমান মহামারী থেকে অন্তত আমরা এইটুকু শিক্ষা নেই যে, “এ জীবন খুবই ঠুনকো, অহংকার, শক্তি কিংবা ক্ষমতার কোনই মূল্য নেই”।
ঈদ মোবারক সবাইকে।
কিং সৌধ ইউনিভার্সিটি
রিয়াদ, সৌদি আরব।