সোমবার শেষ হচ্ছে প্রথম পর্যায়ের প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত টিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে নেই। ভারত থেকে চুক্তির টিকা দ্রুত আনানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিষয়টি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের চুক্তির টিকা আনার জন্য ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।’ তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের কাছে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।
অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত করোনার টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদন করছে। সেরামের কাছ থেকে তিন কোটি টিকা কিনেছে বাংলাদেশ সরকার। এই টিকা সরবরাহ করছে বেক্সিমকো ফার্মা। এ নিয়ে সরকার, বেক্সিমকো ফার্মা ও সেরামের মধ্যে চুক্তি আছে। চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকো ফার্মার প্রতি মাসে ৫০ লাখ টিকা সরবরাহ করার কথা। জানুয়ারিতে ৫০ লাখ এবং ফেব্রুয়ারিতে ২০ লাখ টিকা সরবরাহ করেছে বেক্সিমকো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানতে পারছেন না বেক্সিমকো ফার্মা চুক্তি অনুযায়ী বাকি টিকা কবে নাগাদ সরবরাহ করবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাতৃ, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য কর্মসূচির পরিচালক শামসুল হক বলেন, প্রথম ডোজ টিকা আগামীকাল ৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেওয়া হবে। ৮ এপ্রিল দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে।
বাংলাদেশের সংগ্রহে এ পর্যন্ত এক কোটি দুই লাখ ডোজ টিকা ছিল। দুটো উৎস থেকে এই টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারত সরকার জানুয়ারিতে তার প্রতিবেশী ও বন্ধু কিছু দেশকে টিকা উপহার দিয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশকে ২০ লাখ টিকা দিয়েছিল ভারত। এ ছাড়া গত মাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় ১২ লাখ টিকা উপহার দেয় দেশটি।
অন্যদিকে বেক্সিমকো ২ দফায় ৭০ লাখ টিকা সরবরাহ করেছে। সরকারের মোট টিকার মজুদ ছিল এক কোটি দুই লাখ ডোজ।
শনিবার ৩৯ হাজার ৮৪৩ জন টিকা নিয়েছেন। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৪ জন করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ের প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া আগামীকাল শেষ হবে। কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, কমবেশি ৫৫ লাখ মানুষ প্রথম ডোজ টিকা পাবে। এদের দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করার জন্য ৫৫ লাখ টিকা দরকার। কিন্তু সরকারের কাছে সেই পরিমাণ টিকা নেই।
৫৫ লাখ মানুষকে ২ ডোজ টিকা দেওয়ার জন্য ১ কোটি ১০ লাখ টিকার প্রয়োজন। অর্থাৎ ইতিমধ্যে আট লাখ টিকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই ঘাটতি পূরণ না হলে আট লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাওয়ায় কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
চেষ্টা করেও এ বিষয়ে বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কর্মকর্তারা বলেছেন, টিকা মে মাসের শেষ নাগাদ এলেও চলবে।
খুলনা গেজেট/এনএম