মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচারের পর তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। বয়স হয়েছিল প্রায় ৮৫ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (৩১ আগস্ট) নয়াদিল্লির আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফারাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এদিন বিকেল পৌনে ছ’টা নাগাদ তাঁর পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় টুইট করে এ খবর জানিয়েছেন।
গত ৯ আগস্ট রাতে নিজের দিল্লির বাড়িতে শৌচাগারে পড়ে গিয়েছিলেন প্রণববাবু। পর দিন সকাল থেকে তাঁর স্নায়ুঘটিত কিছু সমস্যা দেখা দেয়। বাঁ হাত নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হচ্ছিল। চিকিৎসকদের পরামর্শে দ্রুত ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, তাঁর মাথার ভিতর রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর অবস্থার উন্নতি হয়নি। ১৩ আগস্ট থেকে তিনি গভীর কোমায় চলে যান।
প্রণব মুখোপাধ্যায় দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসের রোগী। ১০ তারিখ হাসপাতালে ভর্তির পর ধরা পড়ে, তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্তও হয়েছেন। সেই অবস্থাতেই ওই দিন রাতে দীর্ঘ অস্ত্রোপচার হয়। তার পর থেকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল প্রণববাবুকে। অস্ত্রোপচারের আগে, নিজের করোনা সংক্রমিত হওয়ার খবর টুইট করে জানিয়েছিলেন তিনিই। সেটাই ছিল প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শেষ টুইট।
খুবি উপাচার্যের শোক : প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপধ্যায় ছিলেন বাংলাদেশের অকৃত্তিম বন্ধু,সুহৃদ। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্ব, দূরদর্শীতা, প্রজ্ঞা ও ব্যক্তিত্বের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন। তিনি সবসময় চেয়েছেন বাংলাদেশের উন্নতি ও ভারতের সাথে সুসম্পর্ক। উপাচার্য স্মরণ করেন ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়, তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছিলেন। তবে সমাবর্তনের আগে শীতে তাঁর শারীরিক অসুস্থতা কিছুটা বাড়ে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিব বর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসার কর্মসূচির কারণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শেষপর্যন্ত তিনে যোগ দিতে পারেননি। তবে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেন। উপাচার্য তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
খুলনা গেজেট / এমএম