মহানাটকীয়তা! জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার ৫ রান। হাতে তখনো ৩ উইকেট। খুব অনায়াসেই জিতে যাওয়ার কথা। কিন্তু লখনৌ সুপার জায়ান্টস ম্যাচটা জিতল অনেক কঠিন করে।
প্রথম ৫ বলের মধ্যে উঠেছে ৪ রান, পড়েছে ২ উইকেট! শেষ বলে দরকার ১ রান, হাতে আর ১ উইকেট। শেষ বলে রান আউটের সুযোগ পায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। কিন্তু বল ঠিকঠাক ধরতেই পারলেন না দিনেশ কার্তিক। এই সুযোগে কোনো রকমে সিঙ্গেল নিয়েই উল্লাসে ফেটে পড়লেন আভেশ খান।
সোমবার (১০ এপ্রিল) বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বিরাট কোহলি-ডু প্লেসিদের আরসিবির ২ উইকেটে করা ২১২ রানের বড় রান টপকে লখনৌর জয়ের মূল কারিগর পুরান; স্রেফ ১৯ বলে ৬২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন তিনি। এছাড়া ৩০ বলে ৬৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন মার্কাস স্টয়নিস। তবে পুরান-স্টয়নিস ঝড়ের পরও শেষ দিকে জয়টা হাস ফসকে যাচ্ছিল লখনৌর।
এদিন ২১৩ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় লখনৌ। মাত্র ২৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কেএল রাহুলরা। ওপেনার কাইল মায়ার্সকে (শূন্য) শুরুতেই আউট করেন মোহাম্মদ সিরাজ। দ্রুত সাজঘরে ফেরেন দীপক হুডা (৯) এবং ক্রুণাল পান্ডিয়া (শূন্য)। এরপর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক রাহুল ও স্টয়নিস। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন স্টয়নিস। অবশ্য দলকে জিতিয়ে আসতে পারলেন না। ৩০ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা এই অলরাউন্ডার। ৬টি চার ও ৫টি ছক্কা দিয়ে সাজান নিজের ইনিংস। স্টয়নিসের বিদায়ের পর রাহুলও আউট হলেন ২০ বলে ১৮ করে।
ঘরের মাঠে দুইশ ছাড়ানো সংগ্রহ। বল হাতেও একের পর এক সাফল্য। দিনটা আরসিবিরই মনে হচ্ছিল। তবে চিত্রনাট্যের শেষ পাতা লিখলেন নিকোলাস পুরান। ক্যারিবীয় ঝড়ের সাক্ষী হলো আইপিএল।
স্রেফ ১৫ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন তিনি। যা এবারের আইপিএলে সবচেয়ে দ্রুততম অর্ধশতরান। শেষ পর্যন্ত চারটি ৪ ও ৭ ছক্কার মারে তিনি করলেন ১৯ বলে ৬২ রান।
বিধ্বংসী এ ব্যাটারকে গুরুত্বপূর্ণ সময় আউট করে সিরাজ বেঙ্গালুরুর আশা জাগালেও লাভ হল না। পুরানের সঙ্গে দলকে ভরসা দিলেন আয়ুষ বাদানি। তরুণ এ ব্যাটারও আউট হয়ে গেলেন মাত্র ৭ রান বাকি থাকতে। শেষ পর্যন্ত আভেশ খান, জয়দেব উনাদকাটদের মরিয়া লড়াই রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দিল লখনৌকে।
তবে হারের দিনও ব্যাট হাতে আলো ছড়ালেন কোহলি-ডু প্লেসিরা। ৪৪ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক কোহলি। মারলেন ৪টি করে চার ও ছয়।
বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ডু প্লেসি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৪৬ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলে। তার ব্যাট থেকে এল ৫টি করে চার ও ছয়। এছাড়া অজি অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল খেলেন ২৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংস। মারলেন ৩টি চার ও ৬টি ছয়। এ ত্রয়ীর ব্যাটে বড় সংগ্রহ পেলেও বোলারদের ব্যর্থতায় ম্যাচ জিততে পারল না বেঙ্গালুরু।
খুলনা গেজেট/এনএম