বাগেরহাটের চিতলমারীতে পুত্র সন্তান না হওয়ায় সোমা মন্ডল (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৩১ মে) বিকেল ৫ টায় উপজেলা প্রত্যন্তপল্লী চরবানিয়ারী পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ নির্যাতন ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় আহত গৃহবধূকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত সোমা মন্ডল ওই গ্রামের পঞ্চানন মন্ডলের ছেলে লব মন্ডলের স্ত্রী।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সোমা মন্ডল কাতরকণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৭ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে। আমাদের লিখি মন্ডল (১৪), মিতু মন্ডল (৮) ও লিনা মন্ডল (৩) নামের তিনটি মেয়ে রয়েছে। মেয়ে হওয়ার কারণে শ্বশুর পঞ্চানন মন্ডল, শ্বাশুড়ী কনকলতা মন্ডল ও ভাসুর পলাশ মন্ডল আমাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেন। সেই সাথে পুত্র সন্তানের জন্য স্বামী লবকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে আমি বাধা দেওয়ায় আমার উপর অত্যাচারের স্টীমরোলার চালু হয়। প্রায়ই তারা স্বামী বাড়িতে না থাকলে আমাকে মারধর করত। এ ঘটনার জের ধরে শুক্রবার বিকেল ৫ টায় ভাসুর পলাশ মন্ডল ও তার ছেলে স্বাধীন মন্ডল নির্মম নির্যাতন করে।’
গৃহবধূর স্বামী লব মন্ডল বলেন, ‘পরপর তিনটি কণ্যা সন্তান হওয়ায় তাদের কথায় বিয়ে না করায় বাবা এবং বড় ভাই আমাদের কোন জায়গা জমি দেয় নেই। আমি অতি কষ্টে ছোট্ট একটি মুদি দোকান করে চার সদস্যর পরিবার চালাই। অতি কষ্টে মেয়ে তিনটিকে লেখা পড়া করাচ্ছি। তারপরও ওরা সুযোগ পেলেই আমার স্ত্রীকে নির্মম নির্যাতন করে। আমি অভিযোগ করেও এর বিচার পাই না।’
প্রতিবেশী প্রশেন মজুমদার ও মিলন বাড়ৈ জানান, পুত্র সন্তান না হওয়ার কারণে গৃহবধূ সোমাকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন প্রায়ই মারপিট ও নির্যাতন করে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পায় নি।
সোমা মন্ডলের ভাসুর পলাশ মন্ডল নির্মম নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ছোট ভাই লবের বউ বাবাকে মারপিট করায় মহিলারা মিলে সোমাকে কয়েকটা চড়-থাপ্পড় মেরেছে।’
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখব এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
খুলনা গেজেট/কেডি