টেস্টে মাত্রই নিজের সেরা ব্যাটিং ফিগারে (৬৪ রান) পৌঁছুলেন প্যাট কামিন্স, তখনও তার দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে ২২ রানে পিছিয়ে। ক্রিজে অপরাজিত থাকার পরও ঠিক সেই মুহূর্তে ইনিংস ঘোষণা করে বসলেন কামিন্স। যে সিদ্ধান্ত তখন সবাইকেই চমকে দিয়েছিল। অথচ দিনের বাকি মাত্র কয়েক ওভার। এরপর অজি অধিনায়কের সেই সিদ্ধান্ত কাজেও এসেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেতে নেমে দিন শেষ হওয়ার আগে ১৩ রানেই ১ উইকেট হারিয়ে বসেছে ক্যারিবীয়রা।
ব্রিসবেনের গাব্বায় আজ (শুক্রবার) দিবা-রাত্রির টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা গোলাপি বলের মতোই রঙিন ছিল। পুরো দিনে দু’দলই সমান দাপট দেখিয়েছে। ২৬৬ রানে প্রথম দিন শেষ করা ক্যারিবীয়রা এদিন টিকেছিল মাত্র ১৯.২ ওভার। সফরকারীরা অলআউট হয় ৩১১ রানে। এরপর অজিরা ব্যাটিংয়ে নামলে গতির ঝড় তোলেন আলজারি জোসেফ ও কেমার রোচরা। ৫৪ রানেই ৫ উইকেট হারানো স্বাগতিকদের এরপর পথ দেখিয়েছেন উসমান খাজা ও অ্যালেক্স ক্যারিরা। শেষদিকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক কামিন্সও।
যদিও ২২ রানে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় তিনি প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেন। এরপর ১৩/১ নিয়ে দিন শেষ করা ক্যারিবীয়রা এখন পর্যন্ত লিড পেয়েছে ৩৫ রানের। এই ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয়েছিল উইন্ডিজ স্পিন অলরাউন্ডার কেভিন সিনক্লেয়ারের। তার টেস্ট অভিষেকটা স্মরণীয় করেও রেখেছেন। লড়াকু অর্ধশতকের পর একটি উইকেটও নেন বল হাতে। খাজাকে স্লিপে ক্যাচ আউট করার পর টেস্টে প্রথম উইকেট পাওয়ার আনন্দে মাঠেই জিমন্যাস্টদের মতো কয়েকটি ডিগবাজি দেন সিনক্লেয়ার।
এদিন প্রথম ইনিংসে অজিরা ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকে ছিলেন উইন্ডিজ বোলারদের তোপের মুখে। প্রথম ৫ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ডিনার বিরতিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন রোচ। স্টিভ স্মিথকে এলবিডব্লিউ আউট করার পর, জোসেফ মারনাস লাবুশেনকে ক্যাচ আউটে ফেরান। এরপর হ্যাটট্রিকের সুযোগ করেছিলেন রোচ। পঞ্চম ওভারের শেষ দুই বলে ক্যামেরন গ্রিন ও ট্রাভিস হেডকে তুলে নেন। যদিও নিজের পরের ওভারে অবশ্য হ্যাটট্রিকের দেখা আর পাননি এই পেসার।
দ্বিতীয় সেশনে নেমে অবশ্য পাল্টা লড়াই শুরু করে স্বাগতিক অজিবাহিনী। তবে জোসেফের বলে মিচেল মার্শকেও হারিয়ে গভীর বিপদে পড়ে যায় তারা। ঠিক তারপরই প্রতি আক্রমণ শুরু করেন অ্যালেক্স ক্যারি। ষষ্ঠ উইকেটে তিনি খাজার সঙ্গে ৯৯ বলে ৯৬ রানের জুটি গড়েন। ৪৯ বলে ১ ছক্কা ও ৯ চারে সাজানো ইনিংসে ৬৫ রানে আউট হন ক্যারি। এরপর খাজার সঙ্গে কামিন্সের অষ্টম উইকেটে ৮১ রানের জুটি অস্ট্রেলিয়াকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেয়। ৭৩ বলে ৬৪ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে অধিনায়ক কামিন্সকে বিরুদ্ধ স্রোতের নায়ক বললেও ভুল হবে না! ইনিংস ঘোষণার আগে নাথান লায়নের সঙ্গেও ৪৭ রানের জুটি গড়েছিলেন কামিন্স।
এর আগে খাজা ১৩১ বলে ৭৫ রান করে আউট হন উসমান খাজা। লায়নও কামিন্সকে যোগ্য সঙ্গ দিতে গিয়ে ১৯ বলে ১৯ রান করেন। ক্যারিবীয়দের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন জোসেফ। রোচ শিকার করেছেন ৩ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামা উইন্ডিজ ওপেনার তেজনারায়ন চন্দরপলকে তুলে নিয়েছেন পেসার জশ হ্যাজলউড। তিনি আউট হওয়ার পর শেষ হয় দ্বিতীয় দিনের খেলা। অন্য প্রান্তে ৩ রানে অপরাজিত অধিনায়ক ব্রাফেট। এর আগে প্রথম ইনিংসে ক্যারিবীয়দের হয়ে ৭৯ রান এসেছে জশুয়া ডি সিলভার ব্যাটে। পুরোপুরি টেস্ট মেজাজে ১৯৪ বলে ৭১ রান করেছেন কাভেম হজ। এছাড়া নায়োকোচিত ইনিংস (৫০) খেলেছেন টেল-এন্ডারে নামা সিনক্লেয়ার।
খুলনা গেজেট/ এএজে