বটিয়াঘাটা উপজেলার ফুলতলা গ্রামের পুলিশ পুত্র অনুভব মন্ডল যশ (৪) হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে শিশুটির মা তনুশ্রী মহালদার। মঙ্গলবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ এর বিচারক নয়ন বিশ্বাসের আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক অশান্তি থেকে তনুশ্রী মহালদারের মনে হতাশা সৃষ্টি হয়। শ্বশুর ও বাপের বাড়ির লোকজন তাকে পুর্বের কিছু কৃতকর্মের জন্য সন্দেহ করত। এ কারণে তার মনে হতাশা কাজ করে। নিজেও আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল কিন্তু সে মারা গেলে তার সন্তানের কি হবে ভেবে যশ ঘুমিয়ে পড়লে রাত ১০ টা থেকে ১২ টার মধ্যে যে কোন সময় তাকে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর সে নিজেই ৬টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। পুলিশ তার ঘরের খাটের নীচ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দড়ি উদ্ধার করেছে। স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকরারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিতে চাইলে, মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তিনি ঘটনার সব বিবরণ দেন।
এর আগে, রবিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশের সাতদিনের আবেদনের বিপরীতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক নয়ন বিশ্বাস তার চার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের তৃতীয় দিনে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক এ জবানবন্দি দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, অমিত কুমার মন্ডলের স্ত্রী তনুশ্রী মহালদার তাদের সন্তান অনুভব মন্ডল যশকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতো। গত ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় তনুশ্রী মহালদার ছেলেকে নিয়ে বটিয়াঘাটার ফুলতলা সাকিনস্থ তার শ্বশুরবাড়ি আসেন। রাতের খাবার খেয়ে ছেলে অনুভব মন্ডল যশকে দ্বিতলা ভবনের নিচতলার নিজ কক্ষে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরের দিন ৩০ নভেম্বর সকাল অনুমান ১০টার দিকে তার শ্বাশুড়ি পুস্প মন্ডল তনুশ্রীকে উঠতে বললে পরে উঠবে বলে তিনি জানিয়ে দেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তনুশ্রীর মা জোনাকী মহালদার তার শ্বশুড়বাড়িতে আসে। তিনি তার নাতি যশকে কোলে তুললে অচেতন অবস্থায় গলায় কালো দাগ দেখেন। তখন তিনি চিৎকার করলে বাড়িতে উপস্থিত সকলে মিলে দ্রুত যশকে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পুলিশ নিহত শিশু অনুভব মন্ডল যশের মা তনুশ্রী মন্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদে তার আচরণে সন্দেজনক ও রহস্যময় মনে হয়। মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাত সোয়া ১০টায় পুলিশ তনুশ্রী মন্ডলকে গ্রেপ্তার দেখায়। এর আগে মঙ্গলবার সকালে এএসআই অমিত কুমার মন্ডল বাদী হয়ে তার ভাই অনুপ মন্ডলকে আসামী করে বটিয়াঘাটা থানায় মামলা (নং-১) দায়ের করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম