পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী, শনিবার দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হবে। অতি নাটকীয় কোনো ঘটনা না ঘটলে এই ভোটের মাধ্যমেই বিদায়ঘণ্টা বাজবে ইমরান খানের।
ইমরানের বিদায়ের বিষয়টিকে নিশ্চিত ধরে নিয়ে ইতোমধ্যে পাকিস্তানের অন্তবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন— সে বিষয়ে ইতোমধ্যে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে বিরোধী দলগুলো। এই পদে দেশটির বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা ও পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) প্রেসিডেন্ট শেহাবাজ শরিফকেই দেখতে চান বিরোধী নেতারা।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, অন্তবর্তী প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ১ বছর। এই সময়ের মধ্যেই সাধারণ নির্বাচন দিতে হবে অন্তবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারকে।
সংবিধান অনুযায়ী, নিজ মেয়াদে নির্বাচনী সংস্কার ও গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রাখেন অন্তবর্তী প্রধানমন্ত্রী। তবে ধারণা করা হচ্ছে, শপথ গ্রহণের পর দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে অগ্রাধিকার দেবে শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার।
এসব সংস্কারের মধ্যে রয়েছে দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং রুপির দরপতন ঠেকানোর জন্য অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন করা।
শান্তির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সব দেশের সঙ্গে সমানভাবে সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন আনবে সম্ভাব্য নতুন সরকার। নিপীড়নের উদ্দেশ্যে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর কার্যক্রম বন্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন বিরোধী জোটের একাধিক নেতা।
নতুন প্রেসিডেন্ট এবং চারটি প্রদেশে নতুন গভর্নর নিয়োগে সাংবিধানিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইমরান খান সরকারের সব সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা ও পরিবর্তন করা হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
কয়েকজন বিরোধী নেতা জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পরপরই পরামর্শ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারকে দেশে ফেরানোর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নওয়াজ শরিফ বর্তমানে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার। তারপরই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট।
অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণে বৃহস্পতিবার রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
খুলনা গেজেট/ এস আই