একদিন আগেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান এহসান মানি জানিয়েছেন, পাকিস্তান এখন ক্রিকেটের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। খেললে দেশেই মাটিতেই খেলবেন, তা না হলে সিরিজই আয়োজন করবেন না তারা! মানির কথার রেশ কাটার সময়ও পেলো না, তার আগেই পাকিস্তানে ক্রিকেট ম্যাচ সন্ত্রাসী হামলা শিকার হলো। এলোপাতাড়ি গুলিতে আরেকবার কেঁপে উঠলো পাকিস্তানের ক্রিকেট।
আন্তর্জাতিক কিংবা বড় কোনও টুর্নামেন্ট হয়তো না, কিন্তু ২২ গজের খেলায় সন্ত্রাসীদের বৃষ্টির মতো গুলির ঘটনা ক্রিকেট বিশ্বে যে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে না, সেটা জোর গলায় বলার সুযোগ নেই। কেননা পাকিস্তান এখনও ঠিকঠাক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে পারেনি। এর মধ্যেই আঞ্চলিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ম্যাচে সন্ত্রাসী হামলা পাকিস্তানের জন্য মোটেও ভালো খবর নয়।
ঘটনাটা বৃহস্পতিবারের। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কোহাট বিভাগের ওরাকজাই জেলার দ্রাদাই মামাজাই এলাকার আমান ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে আচমকা সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। ম্যাচটি দেখতে ভিড় করেছিলেন অনেক দর্শকই, সঙ্গে ছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সংবাদকর্মীরা।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ছেপেছে, খেলা শুরুর পরপরই মাঠের পাশের পাহাড় থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে সন্ত্রাসীরা। খেলোয়াড়, দর্শক ও সংবাদকর্মীরা নিজেদের জীবন বাঁচাতে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। ফাইনালের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলামের স্থানীয় নেতা হাজী কাসিম গুল।
গোলাগুলির অবস্থা এতটা খারাপ ছিল যে, তাৎক্ষণিক খেলা বাতিল করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না আয়োজকদের। অপ্রত্যাশিত এই ঘটনায় কোনও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি বলে ছেপেছে দ্য নিউজ।
ওরাজকাই জেলা পুলিশ অফিসার নিসার আহমেদ খান জানিয়েছেন, ওই এলাকায় সন্ত্রাসীদের লুকিয়ে থাকার খরব ছিল তাদের কাছে। এখন ওরাজকাই স্কাউস এবং ফ্রন্টিয়ারের সঙ্গে পুলিশ মিলিতভাবে সেখানে অভিযান চালাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ ছিল পাকিস্তানে। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ে সফর দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরে দেশটিতে। এরপর শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও বিশ্ব একাদশ খেলেছে পাকিস্তানে। এখন চলছে ইংল্যান্ডের সফরে আসার আলোচনা। এর মধ্যেই আঞ্চলিক ক্রিকেট ম্যাচ শিকার হলো সন্ত্রাসী হামলার।
খুলনা গেজেট/এএমআর