বিদেশিদের দেয়া অর্থের মাধ্যমে পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফকে (পিটিআই) রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এ অভিযোগ করেছেন সদ্য ক্ষমতাচ্যুত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
তিনি দাবি করেছেন যদি সব সুষ্ঠুভাবে চলে তাহলে পিটিআই, পিএমএলএন, পিপিপির বিরুদ্ধে মামলা একই সঙ্গে চলা উচিত।
তিনি আরও বলেন, আরও একবার পাকিস্তানি জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে চোরদের। পাকিস্তানি শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য তিনি জলসা করছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
করাচির বাগে জান্নাহ’তে এক জলসায় শনিবার বক্তব্য রাখছিলেন ইমরান খান। মেট্রোপলিটনের জনগণকে তার সমর্থনে বেরিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তার করাচি সফর পিটিআইয়ের স্বার্থে নয়। তার এই সফর করাচির শিশুদের ভবিষ্যতের স্বার্থে।
পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে বৈদেশিক অর্থায়ন বিষয়ক মামলার জবাবে ইমরান বলেন, তাকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য এই মামলা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বৈদেশিক অর্থায়নের বিষয়ে (আমার বিরুদ্ধে) মামলা এবং শেহবাজ শরীফের দুর্নীতির মামলা একই সঙ্গে শুনানি হওয়া উচিত।
তিনি দাবি করেন ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) এবং ন্যাশনাল একাউন্টেবলিটি ব্যুরো (এনএবি) তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছে।
তিনি বলেন, যদি আপনারা আমাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে দেয়ালের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলেন তাতে দেশ নয়, আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমরা শান্তিপ্রিয়ই থাকবো।
বক্তব্যের শুরুতে ইমরান খান শ্রোতাদের সতর্কতার সঙ্গে তার বক্তব্য শোনার আহ্বান জানান। যাতে তারা যাচাই করতে পারেন যে, তাকে বাইরে থেকে হস্তক্ষেপে অথবা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।
এ সময় তাকে হস্তক্ষেপ অথবা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ায় বিশ্বাস করেন কিনা সে জন্য হাত তুলে সবাইকে জানাতে বলেন ইমরান।
তিনি বলেন, দেশের বিরুদ্ধে বিরাট এক আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হয়েছে। ক্ষমতার পুরো সময় তিনি কোনো দেশের বিরুদ্ধে ছিলেন না। মানবতার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন।
ইমরান খান বলেন, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন শক্তিশালী ও ক্ষমতাধর কিছু পাকিস্তানি, তাই তিনি সব দেশের সঙ্গেই আন্তরিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাস করেন। তার ভাষায় আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। তবে আমার দেশ কোনো দেশের দাস হোক এটা আমি চাই না। করাচি আসার আগে লোকজন আমাকে বলছিল, আমার পিছু নিয়েছে মাফিয়ারা। তাই আমার জীবন হুমকিতে। তা সত্ত্বেও আমি এখানে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আপনাদের স্বাধীনতার মতো আমার জীবন গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আপনাদেরকে বিদেশি শক্তির দাস বানানো হচ্ছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একজন মীরজাফরকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
মীরজাফর কে ছিলেন উপস্থিত জনগণের কাছে তা ব্যাখ্যা করেন তিনি। তার বিরুদ্ধ ষড়যন্ত্রের বিষয়ে ইমরান বলেন, তিনি তিন থেকে চার মাস আগে জানতে পেরেছেন পাকিস্তানের ওই সময়ের বিরোধী দল, পিটিআইয়ের ভিন্নমতাবলম্বী এমপি এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে আমেরিকান দূতাবাসে মিটিং শুরু করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। ওইসব মিটিংয়ের পরে যখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ডনাল্ড লু সাক্ষাত করেন পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে, তখনই রাষ্ট্রদূত জানতে পারেন যে তার সরকারের (ইমরান খান) বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনা হচ্ছে।