বিশ্বকাপ ক্রিকেটে কঠিন এক পরিস্থিতি সামনে রেখে রাউন্ড রবিন লিগে আজ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান মুখোমুখি হচ্ছে। উভয় দলের জন্য আজকের ম্যাচটি বাঁচামরার লড়াই বলাই যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচটি আজ দুপুর আড়াইটায় চেন্নাইতে শুরু হবে।
র্যাংকিংয়ে দুই দলের মধ্যে পার্থক্য বিস্তর। তবে বিশ্বকাপের বর্তমান পরিস্থিতি তাদের এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আজকের ম্যাচে আফগানিস্তানের হারের অর্থ হচ্ছে বিশ্বকাপ থেকে তাদের বিদায় নিশ্চিত হওয়া। পাকিস্তান খাতা কলমে অবশ্য অতটা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ছে না। আজকের ম্যাচে জয় না পেলে বিশ্বকাপ নিয়ে তাদের পক্ষে বাজির ধরার মানুষের সংখ্যা রকেট গতিতে হ্রাস পাবে।
অতীত পরিসংখ্যান ও র্যাংকিং নিঃসন্দেহে আজকের ম্যাচ পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলছে। কিন্তু অবস্থা এমন যে, পাকিস্তানও নিজেদের পক্ষে বাজি ধরার ব্যাপারে শতভাগ দুশ্চিন্তা মুক্ত হতে পারছে না। কেননা প্রতিপক্ষের নাম আফগানিস্তান। সাতবার মুখোমুখি লড়াইয়ে সাতবারই পাকিস্তান জয় পেয়েছে। কিন্তু সবগুলো ম্যাচে যে সহজ জয় ছিল না তা নয়। কয়েকটা ম্যাচে তো পাকিস্তানকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান।
সাত ম্যাচের দুটোতে আফগাস্তিান ৩ উইকেটে হেরেছিল। অন্য এক ম্যাচে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান ছিল মাত্র এক উইকেট। গত বিশ্বকাপেই তো আফগানিস্তান পাকিস্তানের নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছিল। সে ম্যাচে হারলে আগেভাগে বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তানের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেতো। এবারও ঠিক সেই পরিস্থিতিতে মুখোমুখি দল দুটো। আজ হারলে পাকিস্তানের বিদায় বলা যাবে না ঠিকই, তবে বিদায় শব্দটার সঙ্গে খুব বেশি দূরত্ব থাকবে না।
এবারের বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে দুটো বিভাগে পরিষ্কারভাবে প্রতিপক্ষের তুলনায় এগিয়ে আফগানিস্তান। টপ অর্ডারে বিধ্বংসী ব্যাটিং এবং স্পিন বোলিং। রহমাতুল্লাহ গুরবাজ একাই পাওয়ার প্লেতে সাতটি ওভার বাউন্ডারি মেরেছেন। এবারের বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে পাকিস্তানের কোনো ওভার বাউন্ডারি নেই।
পাকিস্তানের ওপেনাররা এখনো নির্ভরতার প্রতীক হতে পারেননি। ফর্ম খুঁজে বেড়াচ্ছেন তারা। এটাই আফগানিস্তানকে এগিয়ে রাখবে। স্পিন ডিপার্টমেন্টে পাকিস্তান কার ওপরে নির্ভর করবে তাই খুঁজে পাচ্ছে না। শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজ কিংবা উসামা মীর কেউ অধিনায়কের আস্থা অর্জন করতে পারছেন না। অন্যদিকে রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান দলকে নিয়মিত সাফল্য এনে দিচ্ছেন।
সর্বোপরি অধিনায়কত্ব নিয়েও জটিলতায় পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। তিনিও নিজেকে খুঁজে ফিরছেন। সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। অন্য দলের অধিনায়করা যেখানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তখন র্যাংকিংয়ের সেরা এ ব্যাটার রানের দেখাই পাচ্ছেন না।
বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের বিচারে পাকিস্তানের একমাত্র নির্ভরতার নাম শাহিন শাহ আফ্রিদি। নিজের সেরা ফর্মে নেই। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঠিকই নামের প্রতি সুবিচার করেছেন। তাছাড়া আফগানিস্তান তার পছন্দের প্রতিপক্ষ। দেশটির বিপক্ষে উইকেট প্রতি ১৫.২৫ রান দিয়ে ১২ উইকেট নিয়েছেন। পাকিস্তানকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে তাই সতীর্থরা আজও তার দিকে তাকিয়ে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক।
চেন্নাইয়ের এ পিচে পাকিস্তান এর আগে মাত্র দুটো ম্যাচ খেলেছে। উভয় ম্যাচেই তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। দুই ম্যাচেই পাকিস্তান জয় পেয়েছিল- এটাই তাদের কিছুটা হলেও উজ্জীবিত করতে পারে।
খুলনা গেজেট/এনএম