পাকিস্তানে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে হামলা চালায় ভারত। ওই হামলার নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন সিন্দুর’। টার্গেট ছিল পাকিস্তানের সীমান্ত গলিয়ে ঢুকে পড়া। কিন্তু কিছুতেই সেই সীমান্ত অতিক্রম করা সম্ভবপর হয়নি ভারতের। এরপরই আলোচনায় উঠে আসে চীনের তৈরি ‘এইচ-কিউ-নাইন’ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। রাশিয়ার ‘এস-৩০০’-এর আদলের এই প্রযুক্তি পাকিস্তান কিনেছিল তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা আধুনিক করতে। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে এটি কতটা কার্যকর, সেই আলোচনা চলছে ব্যাপকভাবে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির সীমান্তে ভারত অপারেশন সিন্দুর পরিচালনার পর দিল্লির কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে ইসলামাবাদ। এরপর থেকেই আলোচনায় চীন-পাকিস্তানের যৌথভাবে তৈরি পাকিস্তানের এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম।
‘এইচ-কিউ-নাইন’ মিসাইল সিস্টেম এমন এক ধরনের ব্যবস্থা, যা ট্রান্সপোর্টার ইরেক্টর লঞ্চার থেকে মিসাইল ছুড়তে পুরোপুরি সক্ষম। একটি সিস্টেমে থাকে ছয় বা তারচেয়ে বেশি ট্র্যাক। একেকটি ট্রাকে থাকে চারটি করে মিসাইল কনটেইনার। প্রতিটি মিসাইলের ওজন দুই টন, দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৮ মিটার।
শত্রুর যুদ্ধবিমান, ক্রুজ মিসাইল, এয়ার-টু-সারফেইস মিসাইল ও ছোট ব্যালিস্টিক মিসাইল ধ্বংসে সক্ষম এই প্রতিরক্ষা সিস্টেমটি। এ থেকে ছোড়া মিসাইলের গতি হতে পারে ঘণ্টায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত। ২০০ কিলোমিটার দূরত্ব ও ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে সক্ষম এসব ক্ষেপণাস্ত্র।
‘এইচ-কিউ-নাইন’-এ আছে একটি শক্তিশালী রাডার। ১২০ কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্য শনাক্তে সক্ষম এটি। একসঙ্গে প্রায় ১০০টি টার্গেট ট্র্যাক করতে পারে এই রাডার। সক্ষম একই সময়ে ৫০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোয়।
১৯৮০-এর দশকে এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরির কাজ হাতে নেয় চীন। ২০০৯ সালে চীনের বার্ষিক সামরিক প্যারেডে প্রথম প্রকাশ্যে আনা হয় এ যুদ্ধাস্ত্র। যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্যাট্রিয়ট’ ও রাশিয়ার ‘এস-৩০০’ অনুকরণে তৈরি করা হয় এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
এদিকে চীনের এই প্রতিরক্ষা সিস্টেম পাকিস্তানের কোনো কাজে আসেনি, এমনটাই দাবি করছে ভারত। এ নিয়ে ভারতীয়দের বিদ্রূপেরও শিকার হচ্ছে পাকিস্তান।
কিন্তু বাস্তব অবস্থা কী বলে? পাকিস্তানে আক্রমণের পর ভারতের তিনটি রাফাল, একটি সু-৩০-এমকেআই, একটি মিগ-২৯ ফালক্রাম ও একটি ড্রোন এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে মাটিতে নামিয়ে এনেছে পাকিস্তান। এই সাফল্য কি প্রমাণ করছে না পাকিস্তানের এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ সফল?
খুলনা গেজেট/এনএম