বন্দর থেকে ছাড়পত্র পেয়ে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ রাজধানীসহ দেশের পাইকারি বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে। গত তিন দিনে প্রায় সাড়ে আট হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ বাজারে এসেছে। এতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক দরপতন হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে পাইকারিতে ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৩০-৩৫ টাকা কমেছে। দুই দিনের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিতে ১৫ টাকা কমে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে এখনও সেভাবে আমদানি করা পেঁয়াজ পৌঁছায়নি। কিছু কিছু বাজারে সরবরাহ থাকলেও এসব পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৬৫-৭০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৭৫-৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
পাইকাররা বলছেন, গত দুই দিনে পাইকারি বাজারে প্রচুর ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকেছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে আগের কেনা দেশি পেঁয়াজ থাকায় তারাও ভারতীয় পেঁয়াজ কিনছে না। তবে কিছু কিছু বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ যাচ্ছে। এতে মসলাজাত পণ্যটির দাম অনেক কমেছে। সরবরাহ বাড়লে এর দাম আরও কমে আসবে।
ঢাকার ব্যবসায়ী রাকিব হোসেন বলেন, ‘প্রথম দিনে আমদানি করা কিছু পেঁয়াজ বাজারে এসেছে। সময়ের সঙ্গে তা আরও বাড়বে। এতে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে। পাশাপাশি কমছে ভারতীয় পেঁয়াজের দামও। সরবরাহ বাড়লে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ৬০ টাকা করে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। কেউ কেউ আবার ৭০ টাকা করেও বিক্রি করছে। এদিকে খুলনায় আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরায় কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। পুরোপুরি পেঁয়াজ বাজোরে এলে এ দাম আরো কমে আসতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা ধারণা করছে।
ব্যবসায়ী ময়না মিয়া বলেন, ‘দুই দিনে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকার বেশি কমেছে। তিন দিন আগেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি কেজিপ্রতি ৮৫-৯০ টাকায়। আজ বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০-৬৪ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫৮-৬০ টাকা করে। তবে আমাদের এখানে দাম কমলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা আগের দামে বিক্রি করছে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত মাসে কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলে দামের পরিবর্তন হতে থাকে। ১০০ টাকা থেকে পেঁয়াজের দাম দ্রুতই নেমে আসে ৬০-৬৫ টাকায়।
প্রসঙ্গত, পেঁয়াজ উৎপাদন করে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছিল। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে ব্যবসায়ীরা। এতে অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। সরকারের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা।
ফলে বাজার স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত চার লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বুধবার আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন ও প্রথম দিন (সোমবার) দুই লাখ ৮০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।
খুলনা গেজেট/কেডি