খুলনার পাইকগাছায় জান্নাতুল আরাবিয়া ভ্যাকটমারী দারুল উলুম মহিলা মাদ্রাসায় দাতা সদস্যের পুত্রবধূকে চাকরি না দেওয়ায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার দাতা সদস্য শওকত গাজীর ছেলে মুক্তি আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার সোলাদানার ভ্যাকটমারীস্থ ওই মাদ্রাসায় আজিজ ও তার অনুসারীরা তালা ঝুলিয়ে দেয়। ঘটনার জানাজানি হলে তাৎক্ষণিক স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ লোকজন তালা ভেঙ্গে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার ব্যবস্থা করেন।
মাদ্রাসার সুপার আব্দুর রব জানান, গত ২০১০ সালে মুক্তি আব্দুল আজিজের পিতা শওকত গাজী ও মামুদা আলতাফ ২ বিঘা জমি মাদ্রাসায় দান করেন। পরবর্তীতে ওই জমিতে সৌদির একটি সংস্থার সহযোগিতায় প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ওই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর করোনাকালীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নানা সংকটে বন্ধ হয়ে গেলে পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগীতায় পুনরায় প্রতিষ্ঠানটি চালু করা হয়।
এরপর দাতা সদস্যের ছেলে মুক্তি আব্দুল আজিজ তার স্ত্রীকে ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে বলেন। তবে কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়োগ না দেয়ায় শনিবার সকালে তিনিসহ তার লোকজন মিলে মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে দেন। যদিও ঘটনার জানাজানি হলে তাৎক্ষণিক স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ লোকজন তালা ভেঙ্গে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার ব্যবস্থা করেন বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল আজিজ জানান, তার পিতা তার নামে জমি লিখে দিয়ে সেই জমিতে একটি মাদ্রাসা করার জন্য বলেছিলেন। এরপর মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে ভাল শিক্ষক না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি যেন পূর্বের ন্যায় অচল না হয়ে যায় সে কারণে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়োগ দিতে বলেছিলেন। তবে সে বিষয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করে আসছিল। আর যেহেতু তার পিতার দেওয়া জমি তিনি মাদ্রাসায় লিখে দেননি, সংগত কারণেই ওই জমির মালিক হিসেবে তিনি মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়েছেন বলে দাবি করেন।
স্থনীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, মাদ্রাসায় তালা ঝুলানোর বিষটি ঠিক হয়নি। তিনি উভয় পক্ষকেই রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বসে বিষটি নিরসনের কথা জানিয়েছিলেন। তবে তার আগেই মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে দিলে স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তালা ভেঙ্গে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার বিস্তারিত জানতে আব্দুল আজিজকে ডাকা হয়েছে বলে জানান।
এব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল- আমিন জানন, এ বিষয়ে লিখিত কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ টিএ