খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ : হলফনামায় যে তথ্য দিলেন প্রার্থীরা

তরিকুল ইসলাম

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ছয় জন প্রতিদ্ব‌ন্দ্বিতা কর‌ছেন। তাদের মধ্যে দুই জন আইনজীবী ও তিন জন ব্যবসায়ী।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণে পাওয়া যায়, আনন্দ মোহনের আয় সবচেয়ে বে‌শি হ‌লেও সম্পদ বে‌শি কামরুল হাসানের। কৃষ্ণপদ মন্ডলের আয় সব‌চে‌য়ে কম। অস্থাবর সম্পত্তি মোঃ আসাদুল বিশ্বাসের সবচেয়ে কম। আর শিবলী নোমানীর নগদ টাকা সব‌চে‌য়ে বে‌শি। জমি সবচেয়ে বেশি কামরুল হাসানের। কৃষ্ণপদ মন্ডল ও আবুল কালাম আজাদের নি‌জের না‌মে কোন কৃষি-অকৃষি জমি নেই। ত‌বে কৃষ্ণপদ মন্ডলের নির্ভরশীল‌দের না‌মে ও আবুল কালাম আজাদের যৌথ মা‌লিকানায় সামান‌্য জ‌মি রয়েছে।
স্ত্রীর নামে জমি বেশি আনন্দ মোহনের আর স্বর্ণ বেশি কৃষ্ণপদ মন্ডলের। শিক্ষিত বেশি মো. আবুল কালাম আজাদ স্নাতকোত্তর ও সবচেয়ে কম মোঃ আসাদুল বিশ্বাস অষ্টম শ্রেণী পাস।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে, পাইকগাছায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ছয় জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হ‌লেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান টিপু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এড. শেখ আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য এড. স ম বাবর আলীর পুত্র এড. স ম শিবলী নোমানী রানা ও মো. আছাদুল বিশ্বাস। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ারুল ইকবাল মন্টু মনোনয়নপত্র জমা দিলেও প্রত্যাহার করে নেন।পাইকগাছায় দশটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে ২ লাখ ৩১ হাজার ৯৩৮ জন ভোটার রয়েছে।

হলফনামায় পাওয়া যায়, শেখ কামরুল হাসান (টিপু) এইচএসসি পাস। পেশা ঠিকাদারি ব্যবসা। তার বাৎসরিক আয় ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।তি‌নি কৃষি খাত থেকে ৮০ হাজার, বাড়ি ভাড়া থেকে ৯০ হাজার ও ব্যবসা থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বছরে আয় করেন। তার কা‌ছে নগদ রয়েছে এক লাখ টাকা ও তার স্ত্রী রয়েছে ৫০ হাজার টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে পাঁচ লাখ টাকা। ১ লাখ টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল ও ৩২ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। তার স্ত্রীর স্বর্ণ রয়েছে ১০ ভরি, অর্জনকালীন মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে এক লাখ টাকার ও আসবাবপত্র রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার। কৃষি জমি রয়েছে ৪৪ বিঘা, যার অর্জনকালীন সম‌য়ের মূল্য ৮৮ লাখ টাকা। অকৃষি জমি রয়েছে ১৮.৪০ শতক, অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৫৪ লাখ টাকা।

আনন্দ মোহন বিশ্বাস বিএ পাস। পেশা মাছ চাষ ও ব্যবসা। বাৎসরিক আয় ৩১ লাখ ৮০ হাজার ৭৪৩ টাকা। তি‌নি বছ‌রে কৃষি খাত থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার ১০০ টাকা, ব্যাংক আমানত থেকে ২০ হাজার ৮৯৩ টাকা ও মাছ চাষ থেকে ২৪ লাখ ১৯ হাজার ৮৫০ টাকা। তার কাছে নগদ রয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর রয়েছে ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ টাকা। দুটি মোটরসাইকেল রয়েছে, অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৩ লাখ ১১ হাজার টাকা। স্ত্রীর স্বর্ণ রয়েছে পাঁচ ভরি, অর্জনকালীন মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তার ১ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। তার নিজের কৃষি জমি রয়েছে ৭.৩৪ একর ও স্ত্রীর ৫ বিঘা, অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৬৯ লাখ ৯৩ হাজার ২১৫ টাকা। অকৃষি জমি রয়েছে ১২ শতক, অর্জনকালীন মূল্য ৩৫ লাখ ১০ হাজার ৬৬৭ টাকা। দোতলা একটি দালান আছে, অর্জনকালীন মূল্য ৫৩ লাখ টাকা।

মোঃ আবুল কালাম আজাদ এলএলবি ডিগ্রি অর্জনসহ এমএ পাস। পেশায় আইনজীবী। আইন পেশা থেকে বছরে ৪ লাখ টাকা আয়। তার নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা রয়েছে। ব্যাংকে জমা রয়েছে ৪০ হাজার টাকা। একটি মোটরসাইকেল রয়েছে, অর্জনকালীন মূল্য ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। স্ত্রীর স্বর্ণ রয়েছে ৬ ভরি, অর্জনকালীন মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী রয়েছে ১ লাখ টাকার ও আসবাবপত্র রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার। তার নিজের ও স্ত্রীর নামে কোন জমি নেই। যৌথ মালিকানায় তার ৫ বিঘা কৃষি ও দেড় বিঘা অকৃষি জমি রয়েছে, তন্মধ্যে পাঁচ ভাগের এক ভাগ তার। তার নিজের কোনো বাড়ি কিংবা দালান নেই।

কৃষ্ণপদ মন্ডল এসএসসি পাস। পেশা কৃষি ও মৎস্য চাষ। অতীতে পাঁচটি মামলা ছিল যার তিনটি থেকে নির্দোষ ও দুটি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। কৃষি খাত থেকে তার ৫০ হাজার টাকা ও ব্যবসা থেকে ৫০ হাজার টাকা বাৎসরিক আয়। তার নগদ রয়েছে এক লাখ টাকা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৬ হাজার টাকা। স্ত্রীর স্বর্ণ রয়েছে ১৬ ভরি, অর্জনকালীন মূল্য ৯০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী রয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকার ও আসবাবপত্র রয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার। নিজের নামে কৃষি-অকৃষি কোন জমি নেই। একটি দালান রয়েছে যার মূল্য ৬ লাখ টাকা। তার উপর নির্ভরশীলদের নামে ১৩ শতক কৃষি জমে রয়েছে, অর্জনকালীন মূল্য ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

স. ম. শিবলী নোমানী রানা এলএলবি( অনার্স) পাশ। পেশা আইনজীবী। বাৎসরিক আয় কৃষিখাত থেকে ৬ হাজার ও আইনজীবী হিসেবে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তার কাছে নগদ র‌য়ে‌ছে ২১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর রয়েছে ১৫ ভরি স্বর্ণ। তার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী রয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার টাকার এবং আসবাবপত্র রয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকার। তার কৃষি জমি রয়েছে ১২ শতক, অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ২ হাজার ১৫০ টাকা। সাড়ে পাঁচ শতকের একটি বাড়ি রয়েছে, অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ১ লাখ ১২ হাজার ৮৬০ টাকা।

মোঃ আসাদুল বিশ্বাস অষ্টম শ্রেণী পাস। পেশা কৃষি ও রাখি মালের ব্যবসা দেখানো হলেও কৃষি খাত থেকে তার কোন আয় নেই। ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় হয় দুই লাখ টাকা। তার নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর কাছে ৫০ হাজার রয়েছে। স্ত্রীর স্বর্ণ রয়েছে ৫ ভরি, অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৫০ হাজার টাকা।ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী রয়েছে ৮০ হাজার টাকার ও আসবাবপত্র রয়েছে ১ লাখ টাকার। কৃষি জমি রয়েছে আড়াই বিঘা, অর্জনকালীন মূল্য সাড়ে সাত লাখ টাকা। অকৃষি জমি রয়েছে সাড়ে ৭ শতক, অর্জনকালীন মূল্য তিন লাখ টাকা। একটি একতলা দালান রয়েছে, যার মূল্য ১২ লাখ টাকা।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!