সময়ের হিসেবে ১৫ দিন, দূরত্বের হিসেবে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে পাকিস্তানের মুলতান- মাঝের এই সময় বা দূরত্ব পেরিয়ে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছেন পাকিস্তানের তরুণ পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। এই পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই তিনি পেয়েছেন ফাইফার অর্থাৎ ৫ উইকেটের দেখা।
ব্যাটসম্যানদের আধিপত্যে সাজানো মারকাটারি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যুগে বোলাররা যেখানে কোনোভাবে কম রান দিয়ে নিজের স্পেলের ৪ ওভার শেষ করতে পারলেই বাঁচেন, সেখানে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম পাকিস্তানের ২০ বছর বয়সী আফ্রিদি। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ফাইফার নেয়া যেনো অভ্যাসে পরিণত করেছেন তিনি।
শুরুটা করেছিলেন ইংল্যান্ডের ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের শেষ ম্যাচে। হ্যাম্পশায়ারের জার্সিতে খেলতে নেমে মিডলসেক্সের ছয় ব্যাটসম্যানকে ফেরান সরাসরি বোল্ড করে, এর মধ্যে টানা চার বোল্ডে গড়েন ইতিহাস, ম্যাচে নেন ক্যারিয়ার সেরা ১৯ রানে ৬ উইকেট। এরপর ফেরেন দেশে, খাইবার পাখতুনের খেলতে শুরু করেন ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে। প্রথম ম্যাচে নর্দার্ন পাকিস্তানের বিপক্ষে নেন ১ উইকেট, তবে পরের ম্যাচেই বেলুচিস্তানের বিপক্ষে তার বোলিং ফিগার ৪-০-২০-৫!
টুর্নামেন্টের এমন দুর্দান্ত শুরুটা ধরে রেখেছেন আফ্রিদি। তৃতীয় ম্যাচে সাউদার্ন পাঞ্জাবের বিপক্ষে তার শিকার ১ উইকেট। আর সবশেষ সোমবার সিন্ধের বিপক্ষে মাত্র ২১ রান খরচায় ফের নিয়েছেন ফাইফার। অর্থাৎ শেষ পাঁচ ম্যাচে মাত্র ৬.৮০ ইকোনমি রেটে তিনটি ফাইফারসহ মোট ১৮ উইকেট শিকার করেছেন আফ্রিদি। যা তার আগুনে ফর্মেরই সাক্ষ্য দেয়।
সোমবার ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে সিন্ধের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতেছে আফ্রিদির খাইবার পাখতুন। আগে ব্যাট করে শারজিল খানের ৯০ রানের ইনিংসে ভর করে ১৮৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় সিন্ধ। বল হাতে প্রতিপক্ষের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে আউট করেন আফ্রিদি।
এছাড়া বোল্ড আউট করার জন্য বিশেষ নামডাক পাওয়া আফ্রিদি এ ম্যাচেও সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনজনকে। পরে খাইবার পাখতুনের হয়ে রান তাড়ার কাজটি করেন ফাখর জামান ও মোহাম্মদ হাফিজ। ফাখর খেলেন ৪১ বলে ৬১ রানের ইনিংস, হাফিজ অপরাজিত থাকেন ৪২ বলে ৭২ রান করে, ২১ বলে রান করে ইফতিখার আহমেদ শেষের আঁচড়টা দেন।
অবশ্য এ ম্যাচ জিতেও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান পায়নি খাইবার পাখতুন। চার ম্যাচে তাদের জয় তিনটি, সমান ম্যাচ খেলে তিন জয় রয়েছে বেলুচিস্তানেরও। নেট রানরেটে এগিয়ে থাকা দুই নম্বরে বেলুচ আর খাইবারের অবস্থান তৃতীয়। চার ম্যাচের সবকয়টি জিতে ছয় দলের মধ্যে সবার ওপরে নর্দার্ন পাকিস্তান।
এদিকে পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তৃতীয়বার ফাইফার নিলেও আফ্রিদির টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি চতুর্থ ফাইফার। তাও কি না মাত্র ৫৬ ম্যাচ খেলে। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ফাইফারের রেকর্ডে দুই নম্বরে উঠে এসেছেন আফ্রিদি, বসেছেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের পাশে। তবে কম ম্যাচ খেলায় তালিকায় ওপরেই থাকছে আফ্রিদির নাম।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ফাইফার
১/ লাসিথ মালিঙ্গা (শ্রীলঙ্কা) – ২৮৯ ম্যাচে ৫ বার
২/ শাহিন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান) – ৫৬ ম্যাচে ৪ বার
৩/ ডেভিড উইস (দক্ষিণ আফ্রিকা) – ২০৩ ম্যাচে ৪ বার
৪/ সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) – ৩০২ ম্যাচে ৪ বার
এছাড়া ৩ বার ফাইফার নিয়েছেন অঙ্কিত রাজপুত (ভারত), অ্যান্ড্রু এলিস (নিউজিল্যান্ড), টম স্মিথ (ইংল্যান্ড), উমর গুল (পাকিস্তান), মোহাম্মদ সামি (পাকিস্তান) ও জেমস ফকনার (অস্ট্রেলিয়া)।
খুলনা গেজেট/এএমআর