বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ২২তম দেশ হিসেবে তৃতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ বাছাই থেকে ছিটকে গেলেও এশিয়ান কাপের তৃতীয় রাউন্ডে আরও ছয়টি ম্যাচ খেলার সুযোগ রয়েছে জামাল-তপুদের।
তার আগে এক নজর দেয়া যাক একবিংশ শতাব্দিতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের রেকর্ডের দিকে। ভাগ্যের ছোঁয়ায় তৃতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হলেও পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত পাঁচ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দল সেরা পারফর্ম করেছে এবারই!
পাঁচজনের অধিক নিয়মিত ফুটবলার ছাড়াই, আট ম্যাচের মাত্র একটিতে হোম ভেন্যুর সুযোগ পেয়ে, মাত্র দুই ড্রয়ে কীভাবে সেরা বলা যায় সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তার উত্তরে ঘাটা যেতে পারে পরিসংখ্যান। পরিসংখ্যান করা হয়েছে গত পাঁচ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের ম্যাচ খেলার ওপর ভিত্তি করে। অন্তত পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যানে তার হিসেব ধরা হয়েছে।
শুরুতেই ২০০২ সালের কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে। প্রায় ১৯ বছর আগের এই বাছাইয়ে ছয় ম্যাচে ১৫ গোল হজম করে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়েছে পাঁচবার। চার বছর পর জার্মানি বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে তাজিকিস্তানের সঙ্গে দুই ম্যাচে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ড খেলা হয়নি বাংলাদেশের। দুই ম্যাচে দুটি করে গোল হজম করে বাংলাদেশ। সেবার এক ড্র করে লাওস নিশ্চিত করেছিল দ্বিতীয় রাউন্ড।
এরপর ২০১০ সালের সাউথ আফ্রিকা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে আবারও প্রতিপক্ষ তাজিকিস্তান। সেবারও দুই ম্যাচ মিলিয়ে হারে লাল-সবুজরা। ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র আর দ্বিতীয় ম্যাচে ৫-০ গোলে তাজিকদের কাছে হেরে বাছাই থেকে বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশকে।
২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এসে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সুযোগ হয় বাংলাদেশের। সেবার প্রথম রাউন্ডে ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় লেগে গোলশূন্য ড্র করে বাংলাদেশ। ফলে কোয়ালিফাই করে দ্বিতীয় রাউন্ডে।
দ্বিতীয় রাউন্ডে ঘরের মাঠে লেবাননকে ২-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় লেগ ৪-০ ব্যবধানে হেরে তৃতীয় রাউন্ডে যাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয় লাল-সবুজদের। গত রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে আট ম্যাচের সাতটিতে হার ও একটি মাত্র ড্র করে বাংলাদেশ। সেবার সব মিলে ৩২ গোল হজম করে প্রতিপক্ষে জালে পাঠাতে পেরেছিল মাত্র দুটি।
সেবারই ভুটান ট্র্যাজেডি হয়ে প্রায় ১৮ মাস নির্বাসনে ছিল দেশের ফুটবল। সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স চার বছর আগেই হয়েছে লাল-সবুজদের। শেষে এবার ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আট ম্যাচে গোল হজম করেছে ১৯টা। গোল করেছে তিনটা। ছয়টি হারের পাশাপাশি দুইটি ড্র।
সবমিলে অন্তত পাঁচ ম্যাচের হিসেবে কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ম্যাচ প্রতি ২.৫টি গোল হজম করে বাংলাদেশ। ২০০৬ ও ২০১০ এর বাছাইয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে ব্যর্থ হলে হিসেবের বাইরে চলে যাচ্ছে এই দুই বাছাই। ২০১৪ সালের বাছাইপর্বে মাত্র দুই ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সেবারও বিদায় নেয় বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডের থেকে।
রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আট ম্যাচে ৩২ গোল হজম করে বাংলাদেশ। প্রতি ম্যাচে চারটি করে গোল নিজেদের জালে দেখে লাল-সবুজরা। সবচেয়ে বেশি গোল হজম করে বাংলাদেশ সেবারই। আর কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সবচেয়ে কম ম্যাচ প্রতি ২.৩৭টি গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। নিশ্চিত করেছে তৃতীয় রাউন্ড।
সংখ্যার হিসেবে বলা যায় সেরা পারফর্ম এবারই করেছে বাংলাদেশ। যদিও পরিসংখ্যান পুরোপুরি চিত্র প্রকাশ করতে পারে না। খেলার ধরনও বোঝা সম্ভব নয়।
হোম ভেন্যুর সুবিধা ছাড়াই আর নিয়মিত একাদশের একাধিক ফুটবলারকে ছাড়াই বাংলাদেশের পারফরমেন্সের পরিসংখ্যান অন্তত উন্নতির স্বাক্ষী দিচ্ছে। সূত্র: নিউজবাংলা।