বহুদিন পর আবাহনী বনাম মোহামেডানের মধ্যকার ম্যাচে এমন উত্তেজনা দেখল ক্রিকেট ভক্তরা। ঢাকার দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের আজকের লড়াই যেন মনে করিয়ে দিল নব্বই দশকের স্মৃতি। সব উত্তেজনার কেন্দ্রে ছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ম্যাচ চলাকালীন সময়ের আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে গেলেন তিনি। এমন উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে মোহামেডানেরই। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আবাহনী লিমিটেডকে হারিয়েছে সাকিবের মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
শুক্রবার (১১ জুন) ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির ৪০তম ম্যাচে বৃষ্টি আইনে আবাহনীকে ৩১ রানে হারিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ২০১৫-১৬ মৌসুমের পর আবাহনীর বিপক্ষে এই প্রথম জিতল মোহামেডান।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৫ রান করে মোহামেডান। দলের পক্ষে ২৭ বলে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন সাকিব। ২২ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদুল হাসান। ইমনের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান।
জবাব দিতে নেমে বৃষ্টি আইনে নির্ধারিত ৯ ওভারে আবাহনীর সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭৬ রানের। অর্থাৎ শেষ ১৯ বলে ৪৫ রান। সে লক্ষ্যে মাত্র ১৩ রান যোগ করতে পারে তারা। নির্ধারিত ওভারে ছয় উইকেটে ৪৪ রানের বেশি করতে পারেনি আবাহনী। মুশফিক ১৮ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। এ ছাড়া ২০ বলে ১৫ রান করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
মোহামেডানের হয়ে বল হাতে ভালো করেছেন শুভাগত হোম। ১৭ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। বৃষ্টির পর ৫ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন তাসকিন আহমেদ। এ ছাড়া একটি উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ রাহি।
আবাহনীর ইনিংসের সময়ই বিতর্কে জড়ান মোহামেডানের তারকা ক্রিকেটার সাকিব। মোহামেডানের দেওয়া ১৪৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামে আবাহনী। তাদের ইনিংসের মধ্যেই এই অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যায়। পঞ্চম ওভারে সাকিবের করা বল ঠিকমতো লাগাতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের প্যাডে লেগে যায় বল। সঙ্গে সঙ্গে এলবির আবেদন তোলেন সাকিবরা। খালি চোখে দেখে আউটই মনে হয়েছিল। কিন্তু সাকিবদের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। সাড়া না পেয়ে মুহূর্তের মধ্যে স্টাম্পে লাথি মেরে বসেন মোহামেডানের অধিনায়ক সাকিব।
এরপর আম্পায়ার ইমরান পারভেজের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সতীর্থরা তাঁকে শান্ত করে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই মুহূর্তে আবাহনীর সংগ্রহ ছিল তিন উইকেটে ২১ রান। বৃষ্টির সম্ভাবনা শুরু হয়। তাই বৃষ্টি আইনে এগিয়ে থাকতে পরের ওভারে শুভাগত হোমের বলে শান্ত চড়াও হওয়ার পরপরই বৃষ্টি নামে।
ওই সময় মিডঅফে ছিলেন সাকিব আল হাসান। মুহূর্তের মধ্যে দৌড়ে এসে তিনটি স্টাম্প তুলে আছাড় মারেন মোহামেডান তারকা। আম্পায়ারের সঙ্গে ফের তর্কে জড়িয়ে যান তিনি। আবাহনীর ড্রেসিং রুমের দিকেও গিয়েও কিছু বলতে দেখা যায়। সাকিবের কাহিনী দেখে আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদও সাকিবের দিকে তেড়ে আসেন। তাঁকে গিয়ে শান্ত করেন মোহামেডান ক্রিকেটার শামসুর রহমান শুভ। সতীর্থরা এসে শান্ত করেন সাকিবকে।
খুলনা গেজেট/ এস আই