মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে ডুবে যাওয়া কয়লা বোঝাই কার্গো জাহাজটির উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে জাহাজ মালিক পক্ষ ও কয়লা পরিবহন ঠিকাদার যৌথভাবে প্রাথমিক পর্যায়ের এ উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে।
প্রথমে ডুবন্ত কার্গোটি যেখানে রয়েছে সেই জায়গায় মার্কিন বয়া স্থাপন করা হয়েছে। এরপর কার্গো জাহাজে থাকা কয়লা অপসারন ও পরবর্তীতে জাহাজটি উত্তোলন করার পরিকল্পনা রয়েছে জাহাজ মালিক পক্ষ ও কয়লা আমদানীকারকদের।
কয়লা পরিবহন ঠিকাদার খুলনার মোহাম্মাদি ইন্টারন্যাশনালের অপারেশন ম্যানেজার মোঃ অখিনুর রহমান জানান, প্রাথমিক ভাবে ডুবন্ত কার্গোটির অবস্থান শনাক্ত হলেও নদীর জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করেই উদ্ধার তৎপরতা চালানো হবে। এ উদ্ধার তৎপরতায় অন্তত ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগতে পারে। তবে বন্দরে যদি বড় ধরনের উদ্ধারকারী জাহাজ থাকতো তবে দু’এক দিনের মধ্যে ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি উদ্ধার করা সম্ভব হতো বলেও জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে দুর্ঘটনার বিষয় মঙ্গলবার রাতে মোংলা থানায় পৃথক দুটি সাধারণ ডায়রী করেছেন কার্গো জাহাজের মাষ্টার মোঃ মাহলম ও কয়লা আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান। অপরদিকে কার্গোটি ডুবে যাওয়ার পর পরই ঘটনাস্থলে হানা দেয় মোংলা বন্দর কেন্দ্রিক গড়ে উঠা একটি সংঘবদ্ধ চোরা গ্রুপের সদস্যরা। কয়েক দফায় লাইটারের উপরের অংশ মাস্তুল, সিগনাল লাইট, ওয়ার, রশিসহ গুরুপূর্ন বিভিন্ন যন্ত্রাংশ লুট করে নিয়েছে তারা। আর এ বিষয় পুলিশকে অবহিত এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়েছেন কার্গো মালিকপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত সোমবার বন্দর চ্যানেলের হারবাড়িয়ায় ৬নং বয়ায় অবস্থানরত একটি বিদেশী মাদার ভ্যাসেল (বিদেশী বাণিজ্যিক বড় জাহাজ) থেকে ৭শ’ মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই করে খুলনার যশোর নওয়াপাড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় কার্গো জাহাজ এমভি ইফসিহা মাহীন। পরবর্তীতে মোংলা পশুর নদীর মোহনায় কাটাখালী নামক স্থনে ক্রীক বয়ায় যাত্রা বিরতির এক পর্যায় নদীর স্রোতের টানে রশি ছিড়ে অপর একটি লাইটারের উপর আছড়ে পড়ে কয়লা বোঝাই এ জাহাজটির তলা ফেঁটে যায়। এ সময় মাষ্টার দ্রুত চালিয়ে তীরের কাছাকাছি পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই মুহুর্তের মধ্যে ডুবে যায় কয়রা বোঝাই কার্গো জাহাজটি। ওই সময় জাহাজে থাকা মাষ্টারসহ ১০ নাবিক নদীতে ভাসতে থাকে। পার্শবর্তী কার্গোতে থাকা অন্য নাবিকরা তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের অক্ষত অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে নাবিকরা জীবনে বেঁচে গেলেও তাদের সাথে থাকা মুল্যবান মালামাল হারিয়েছে বলে জানায় মাস্টার মোঃ শাহলম।
খুলনা গেজেট/ টি আই