দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ৫দিন বাকী। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন। তাই শেষ মুহুর্ত্বের প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা। জেলার চারটি সংসদীয় আসনের তিনটিতে মোটামুটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হলেও কোন রকম নির্বাচনী উত্তাপ নেই সাতক্ষীরা-৩ আসনে।
সাতক্ষীরা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক। এখানে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের আরো ৬জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকলেও অন্য কোন প্রার্থীই ডাঃ হকের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মত তেমন পরিস্থিতি এখনো তৈরী করতে পারেনি। নির্বাচনী মাঠে একই রুহুল হকের উপস্থিতি লক্ষনীয়। যে কারণে ৭ জানুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটের মধ্যে তেমন কোন আগ্রহ নেই। ফলে এই আসনের নৌকার প্রার্থী ডা: আফম রুহুল হকের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো।
সাতক্ষীরার আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৩ নির্বাচনী এলাকা। এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩১ হাজার ৩৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লক্ষ ১৮ হাজার ২৪৬ জন এবং নারী ভোটার ২ লক্ষ ১৩ হাজার ১৩৪ জন। মোট ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনের ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৪ টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ৯৩৫ টি।
সাতক্ষীরা-৩ আসনে পঞ্চম বারের মত নৌকার মাঝি হয়েছেন ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক। এই আসনে ডাঃ হক ছাড়াও বাকি যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা হলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এড. স ম আলিফ হোসেন, এনপিপির মোঃ আব্দুল হামিদ, জাকের পাটির মোঃ মঞ্জুর হোসেন, তৃণমূল বিএনপির রুবেল হোসেন ও সাম্যবাদী দলের (এম এল ) শেখ তারিকুল ইসলাম। এসব প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠে তেমন কোন আলোচনা নেই। জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলিফ হোসেন এলাকায় কিছুটা গনসংযোগ করলেও অন্য প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা একেবারেই চোখে পড়ছে না।
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের ভবরঞ্জন কুমার বলেন, এবারের নির্বাচনে নৌকা ছাড়া আর কোন প্রার্থীর দেখা মিলছে না। এলাকায় নৌকা ছাড়া অন্য কোন দলের লিফলেট পর্যন্ত নেই। অধিকাংশ ভোটাররা অন্য প্রার্থীদের চেনেন না। বিধায় ভোট দিলেও নৌকা পাশ করবে, ভোট না দিলেও নৌকার পাশ করবে। এসব কারণে সাধারণ মানুষের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার তেমন কোন আগ্রহ দেখছি না।
একই উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের অজিয়ার রহমান বলেন, ডাঃ রুহুল হক ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীকে তো দেখলাম না। প্রার্থী না চিনলে ভোট দেবে কার ? নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে ভোটারদের মধ্যে ভোট দেওয়ার আগ্রহ বাড়ে না। যে কারণে অনেকে এবার ভোট কেন্দ্রে নাও যেতে পারেন। ফলে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো রুহুল হক সাহেবর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
দেবহাটার সখিপুরের ভোটার রহমান গাজী (৫০)। তিনি বলেন, এলাকার কেউ ভোট দিতে যাবে বলে মনে হচ্ছে না। শুনছি ৬ জন প্রার্থী। কিন্তু নৌকার প্রার্থী ডাঃ রুহুল হক ছাড়া অন্য কোন প্রার্থী মাঠে নেই। মাঝে একদিন লাঙ্গলের প্রার্থীকে দেখলাম। তবে তার কোন লিফলেট, প্রচারপত্রও দেখছি না। বিধায় ভোট দিতে যাবো না।
সাতক্ষীরা-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী ডাঃ রুহুল হক বলেন, আমার আসনে আওয়ামী লীগের কোন বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। চেষ্টা করছি মানুষ যাতে ভোট দিতে কেন্দ্রে যায়। আমি প্রতিদিন আমার নির্বাচনী এলাকার এক পান্ত থেকে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছি। আমার বিশ্বাস আমাকে ভোট দেয়ার জন্যই ভোটাররা তাদের নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রে যাবে। তবে প্রতিপক্ষকে আমি কখনও খাটো করে দেখছি না। এবার নির্বাচিত হতে পারলে এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানসহ অসাপ্ত কাজ গুলো শেষ করবো বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ টিএ