পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তফসিল অনুযায়ী যথাসময়েই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার যে ভয় দেখানো হচ্ছে, তাতে সরকার কান দেয় না। এসব জুজুর ভয়। জুজুর ভয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বুধবার বিকেলে তিনি তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমন মন্তব্য করেন।
একতরফা ভোট হলে মার্কিন ভিসা নীতি কার্যকর এবং নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতারা আশঙ্কা করছেন। এ নিয়ে জানতে চাইলে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা স্যাংশনের (নিষেধাজ্ঞা) আশঙ্কায় কান দিই না। ওসব জুজুর ভয়। আমরা সেই ভয় করি না। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।’
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, কেউ বাধা দিতে পারবে না। যারা বাধা দেবে, তাদের শাস্তি হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের আহ্বানের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, বিদেশিরা কে কী বলল তা অপ্রাসঙ্গিক (ইরিলেভেন্ট)। দেশের মানুষ কী চায়, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ নির্বাচনের জন্য উদ্গ্রীব হয়ে আছে। এ অবস্থায় নির্বাচন বানচালের চেষ্টায় জ্বালাও–পোড়াও হলে তা সহ্য করা হবে না। অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে জনগণের কাছে সরকারের অঙ্গীকার রয়েছে উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপিসহ দেশের প্রধান বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে দাবি জানাচ্ছে, বলা হচ্ছে তা জনগণের দাবি। তাহলে সেটি সরকার আমলে নেবে কি না, জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই বিএনপি বড় দল। কিন্তু তারা কতটা বড়? ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। ওই নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো প্রশ্ন নেই। সুতরাং তাদের বড়ত্ব নির্বাচনে এসেই প্রমাণ করতে হবে। বিএনপি বড় রাজনৈতিক দল হলে নির্বাচনে এসে প্রমাণ করুক, তারা বড় দল।’
বিদেশিরা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে অব্যাহতভাবে যে তাগিদ দিচ্ছে, সেটাকে সরকার কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গাজায় এত মানুষ মারা যাচ্ছে; তারা তা দেখছে না? আর বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের যে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ জানিয়েছেন; তাঁরা আসলে ঘুমাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের দ্বিমুখী অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়।’
ন্যূনতম মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তৈরি পোশাকশিল্প খাতে অস্থিরতা শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরে কোনো অস্থিরতা নেই। দু–একটি গার্মেন্টস ছাড়া সবই খোলা রয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, এ ইস্যুতে নির্বাচনের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আরও কিছু দেশ তাদের ফায়দা লুটতে চায়।