নিউ জিল্যান্ডের ২১৯ রান তাড়া করতে নেমে পথ হারানো অস্ট্রেলিয়া অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির শেষ ওভারে ছড়ায় রোমাঞ্চ। যাতে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বাজি ধরেন জিমি নিশামকে নিয়ে। ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওভারে বল হাতে নিয়ে বাজিমাত করেন ডানহাতি ফাস্ট বোলার।
২২০ রানের বিশাল লক্ষ্যে নেমে মিচেল স্যান্টনারের এক ওভারে তিন উইকেট হারালে ১৩তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ১১৩/৬। সহজ জয়ই দেখছিল নিউ জিল্যান্ড। কিন্তু মার্কাস স্টয়নিস ও ড্যানিয়েল স্যামস একসঙ্গে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন। ডানেডিনে তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে স্বাগতিক দল ও উপস্থিত দর্শকদের দম বন্ধ হওয়ার যোগাড়। শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্য কমিয়ে আনে ১৫ রানে। দলকে রক্ষার দায়িত্ব পড়ে আগের ১৯ ওভারে একটিও বল না করা নিশামের কাঁধে। হতাশ করেননি তিনি। ওই একমাত্র ওভারেই দুই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে নিউ জিল্যান্ডের ৪ রানের জয় নিশ্চিত করেছেন নিশাম।
ব্যাট হাতেও ঝড় তুলেছিলেন স্বাগতিক এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ১৬ বলে ১ চার ও ৬ ছয়ে ৪৫ রানে অপরাজিত ছিলেন নিশাম। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে নিউ জিল্যান্ড জিতলেও জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া মার্টিন গাপটিল হয়েছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়। যদিও ৩ রানের আক্ষেপ থেকে গেছে কিউই ওপেনারের। ২৭ বলে চারটি করে চার ও ছয়ে করা ফিফটিকে অল্পের জন্য তিন অঙ্কের ঘরে নিতে পারেননি গাপটিল। ৫০ বলে ৬ চার ও ৮ ছয়ে ৯৭ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান।
এর আগে উইলিয়ামসনের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৭০ বলে ১৩১ রানের অসাধারণ জুটি গড়েন গাপটিল। তিনি ফেরার পরের ওভারেই থামেন অধিনায়ক। ৩৫ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ে ৫৩ রান করেন উইলিয়ামসন। শেষ দিকে নিশাম ঝড়ে চ্যালেঞ্জিং স্কোর ছুড়ে দেয় নিউ জিল্যান্ড। ৭ উইকেটে তারা করে ২১৯ রান।
বিশাল লক্ষ্য দেওয়ার পর ৮৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার লাগাম টেনে ধরেছিল নিউ জিল্যান্ড। সফরকারীদের তারা খাদের কিনারায় নিয়ে যায় ইনিংসের ১৩তম ওভারে। আগের ওভারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফেরানোর স্যান্টনার তার শেষ ওভারে জশ ফিলিপ (৪৫), অ্যাস্টন অ্যাগার (০) ও মিচেল মার্শকে (০) ফেরান।
স্টয়নিসের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে যুগলবন্দি হন স্যামস। দুজনের মারকুটে ব্যাটিংয়ে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ১৮তম ওভারে ট্রেন্ট বোল্ট ৬ রান দিয়ে কিছুটা স্বস্তি ফেরান স্বাগতিকদের মনে। কিন্তু ১৯তম ওভারে টিম সাউদি ১৫ রান দিলে জমে ওঠে লড়াই।
শেষ ওভারে ১৫ রান দরকার ছিল অস্ট্রেলিয়ার, যা সম্ভব করার জন্য ক্রিজে ছিলেন দুই সেট ব্যাটসম্যান। এই চাপের মুহূর্তে বল হাতে নেন নিশাম। প্রথম বলেই ডিপ মিডউইকেটে স্যামস ক্যাচ হন ফিলিপসের। ১৫ বলে ২ চার ও ৪ ছয়ে ৪১ রান করে ফিরে যান তিনি। তাদের ৩৭ বলে ৯২ রানের জুটিটি ছিল এই ফরম্যাটের সপ্তম উইকেটে সর্বোচ্চ।
স্যামসের ক্যাচ হওয়ার সময় স্ট্রাইকিং প্রান্ত বদলে নিশামের মুখোমুখি হন স্টয়নিস। দুটি বল ডটের পর চতুর্থ বলে লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান অজি ব্যাটসম্যান। পরের বলেও একই জায়গা দিয়ে শট খেলতে গিয়ে সাউদির ক্যাচ হন স্টয়নিস। তাতেই নিজেদের ফিরে পায় স্বাগতিকরা। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৯ রানের, চার মারেন ঝাই রিচার্ডসন। ৮ উইকেট হারিয়ে অজিরা থামে ২১৫ রানে। ২০তম ওভারে ১০ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে জয়ের নায়ক নিশাম।
দুর্দান্ত এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেলো নিউজিল্যান্ড।
খুলনা গেজেট/কেএম