আমদানি করার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাড়িয়ে না নেয়ায় বিভিন্ন মডেলের ১০২টি গাড়ি নিলামে তুলছে মোংলা কাস্টমস হাউস। আগামী ৪ অক্টোবর এই নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। সিল্ড টেন্ডার ও অনলাইন দুভাবে নিলামে অংশ নিতে পারবেন আগ্রীরা।
মোংলা কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু বাসার সিদ্দিকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ‘ই-অকশন ও মোংলা কাস্টমসের ওয়েবসাইটে নিলামে ওঠানো পণ্যের সংরক্ষিত মূল্যসহ ক্যাটালগ প্রকাশ করা হয়েছে। অনলাইনে জমা দেয়ার জন্য দরপত্র কেনার প্রয়োজন নেই। ২ থেকে ৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত যে কেউ ই-অকশনের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে নিলামে অংশ নিতে পারবেন বলেও জানান কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার রাজস্ব এই কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, এর মধ্যে ই-অকশন ও মোংলা কাস্টমসের ওয়েবসাইটে নিলামের পণ্যের মূল্যসহ ক্যাটালগ প্রকাশ করা হয়েছে। ‘সিল্ড টেন্ডারের ক্ষেত্রে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ২০০ টাকা অফেরতযোগ্য দরপত্র কেনা যাবে। ৪ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মোংলা, খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম কাস্টমসে রাখা বাক্সে দরপত্র জমা দিতে হবে। উভয় ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ জামানতসহ দরপত্র জমা দিতে হবে।’ ২-৪ অক্টোবর ই-অকশনের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে নিলামে অংশ নিতে পারবেন। তবে অনলাইনে অংশ নিতে দরপত্র কেনার প্রয়োজন নেই।
অনলাইনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কাস্টমসের অনলাইন নিলামের ওয়েবসাইটে মোংলা কাস্টম হাউস সেকশনে ক্লিক করলে নিলামের তালিকা মিলবে। সেখানে রেজিস্ট্রেশন করে গ্রাহকরা অনলাইনে নিলামে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন।’
১১ অক্টোবর সকাল ১০টায় মোংলা কাস্টমসে দরপত্র খোলা হবে। এবারের নিলামে উঠছে নিশান, টয়োটাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হাইয়েস, নোয়াহ, অ্যালিয়ন, প্যারাডো সহ বিভিন্ন মডেলের ১০২টি গাড়ি ও ১০টি অন্যান্য আমদানিপণ্য।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি করা এ সব গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে ছাড়িয়ে নেওয়ার নিয়ম থাকলেও সংশ্লিষ্টরা তা করেননি। তাই নিয়মানুযায়ী নিলামে ওঠানো হচ্ছে। নিলামে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতার তালিকা প্রকাশের পর গাড়িগুলো বিক্রি করা হয়। পরে সর্বোচ্চ দরদাতাকে নিলামে ক্রয় করা গাড়ি বুঝিয়ে দেয়া হবে।’
মোংলা বন্দরের উপসচিব (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ‘২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের সমুদ্রবন্দর দিয়ে ৩৪ হাজার ৭৮৩টি গাড়ি আমদানি করা হয়েছিল। তার মধ্যে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি হয় ২০ হাজার ৮০৮টি, যা দেশে মোট আমদানি করা গাড়ির ৬০ শতাংশ। চলতি অর্থবছরেও মোংলা বন্দর দিয়ে প্রায় দেড় হাজারের মতো গাড়ি আমদানি হয়েছে।’
মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বলেন, ‘মোংলা কাস্টমসের মোট রাজস্ব আয়ের ৫২ শতাংশ আসে আমদানি করা গাড়ির শুল্ক থেকে। দীর্ঘদিন আমদানীকৃত গাড়ি বন্দরে পড়ে থাকলে অন্য পণ্য রাখায় সমস্যা হয়। নিলাম প্রক্রিয়া চালু রাখলে গাড়ি বা অন্য পণ্য রাখতে ব্যবসায়ীদের সুবিধাও হয়, অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ে সরকারের রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে।’