খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ইসি গঠনে সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতি পালিয়েছে
  সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের তিন সহযোগী গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪
  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত

নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু

গেজেট ডেস্ক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনাররা। বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইসির পদক্ষেপ ও প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেন তারা। এ সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে তফশিল ঘোষণার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এখন কমিশন সভা করে জাতীয় নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা সারবে। তফশিল ঘোষণা এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন নিয়ে চলছে তোড়জোড়। ব্যালট ছাপাতে কেপিএম থেকে কাগজ সংগ্রহ করছে ইসি।

তফশিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে কমিশন। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কমিশন সভা ডাকা হয়নি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে কমিশন সভা হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সভার দিনই তফশিল ঘোষণা হতে পারে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। যদিও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতা করে আসছে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তারা ধর্মঘট-অবরোধের মতো কর্মসূচিও পালন করছে।

বিরোধী দলগুলোর অবরোধের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে যান সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা। সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সাংবিধানিক রীতিনীতি ও বিধিবিধান অনুসরণ করে কমিশনকে সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

অপরদিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে দ্রুত তফশিল ঘোষণার কথা জানান সিইসি। তিনি বলেন, যে কোনো মূল্যে নির্ধারিত সময়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। দ্রুত নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হবে। ২৯ জানুয়ারির আগেই নির্বাচন করতে হবে বলেও জানান তিনি। সিইসি বলেন, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। নির্বাচনের তফশিল নিয়ে এখনো পুরোপুরি সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে কমিশনের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। যথাসময়ে নির্বাচন হবে।

পারিপার্শ্বিক ও সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে আগামী নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি যুগান্তরকে বলেন, নির্বাচনের তফশিল এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নির্বাচন কমিশনাররা আনুষ্ঠানিক সভা করে তফশিল চূড়ান্ত করবেন। এরপর ওই তফশিল ঘোষণা করা হবে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের রেওয়াজ আছে। ওই রেওয়াজ অনুযায়ী এ সাক্ষাৎ করলেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এখন তফশিল ঘোষণার বিষয়টি পুরোপুরি ইসির এখতিয়ারাধীন। তারা আরও জানান, এবারও জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মধ্য দিয়ে তফশিল ঘোষণা করা হবে। তফশিল ঘোষণা থেকে ভোট পর্যন্ত কমবেশি ৫০ দিনের ব্যবধান রাখা হতে পারে।

নির্বাচন পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর অংশগ্রহণের সুযোগ ও সম্ভাবনা কমে আসছে। মনোনয়নপত্র দাখিলের আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হলে আবারও একপাক্ষিক নির্বাচন হবে। তখন নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাও কঠিন হবে। ২০১৪ সালে বিএনপিসহ অনেক দল অংশ নেয়নি। ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও হয়েছিল। ওই সময়ে দেশে দীর্ঘমেয়াদি হরতাল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এবার নির্বাচনে বিএনপিসহ কয়েকটি দল অংশ নেবে না বলে আসছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সিইসির অবস্থান জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যান।

সূত্র জানায়, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছে ইসি। অন্যান্য নির্বাচনে তফশিল ঘোষণার পর এ ধরনের বৈঠক হয়ে থাকে। এবার আগাম প্রস্তুতি হিসাবে তফশিল ঘোষণার আগেই এ বৈঠক করেছে ইসি। এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থাগুলো থেকেও প্রতিনিয়ত তথ্য সংগ্রহ করছে। এছাড়া তফশিল ঘোষণার পর আবারও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কৌশল নির্ধারণ করছে ইসি।

দ্বিতীয় ধাপে ডিসি-এসপিদের প্রশিক্ষণ শুরু আজ 

বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দ্বিতীয় ধাপের প্রশিক্ষণ কর্মশালা আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে। দুই দিনের এ আবাসিক প্রশিক্ষণ শনিবার শেষ হবে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের প্রশিক্ষণে ৩২ জেলার ডিসি ও এসপি ছাড়াও বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ কমিশনারসহ ১১৪ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেবেন। সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রধান অতিথি হিসাবে এ কর্মশালার উদ্বোধন করবেন। এতে অন্য চার কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে ২ ও ৩ নভেম্বর নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দুই দিনের আবাসিক এ প্রশিক্ষণ হওয়ার কথা ছিল। বিএনপির কর্মসূচির কারণে সেটি স্থগিত করা হয়। এর আগে পূজার কারণে আরেক দফা পেছানো হয়েছিল কর্মসূচিটি। ১৪ ও ১৫ অক্টোবর দেশের ৩২টি জেলার ডিসি, এসপি, চার বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ও মেট্রোপলিট্রন পুলিশ কমিশনারসহ ১১৬ জন নিয়ে প্রথম ধাপের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ হয়।

ব্যালট ছাপতে কেপিএম থেকে কাগজ সংগ্রহ করছে ইসি 

রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট ছাপাতে এশিয়ার বৃহত্তম কাগজের কল রাঙামাটির কর্ণফুলি পেপার মিল (কেপিএম) থেকে কাগজ সংগ্রহ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে ইসির চাহিদা অনুযায়ী কাগজ সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কেপিএম ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। এজন্য কেপিএম থেকে ১ হাজার ৬০০ টন কাগজ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েক ট্রাক কাগজ নির্বাচন কমিশনের প্রধান দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার আরও সাত ট্রাক কাগজ সরবরাহ করেছে কেপিএম। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম আনিসুজ্জামান জানান, আমরা নির্বাচন কমিশনকে যথাসময়ে কাগজ দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টায় রয়েছি। এছাড়া কাগজ উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!