খুলনা, বাংলাদেশ | ১ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  অপারেশন ডেভিল হান্টে ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৫৬৬ জন গ্রেপ্তার
  ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে: ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে ড. ইউনূস

নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে বিএনপি-জামায়াত বিপরীত অবস্থানে

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে গত ৬ মাসে বেশ কিছু বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বিরোধ চলছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইস্যুতে সেই বিরোধ আরও তীব্র হলো।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে স্বাক্ষাত করে বিএনপি নেতারা আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, পরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজনের দাবি তুলেছেন। একই দাবি তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছেও উত্থাপন করেছেন। পাশাপাশি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দাবি করে বিএনপি বলছে, নির্বাচন সংসদ প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে। সংসদ ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা যাবে না।

এই বক্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বলেছেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়, সেই সময় দিতে জামায়াত প্রস্তুত রয়েছে।

নির্বাচন ইস্যুতে দল দুটির এই বিরোধ আগামী দিনের রাজনীতি ও নির্বাচন ঘিরে কত দূর গড়াবে, এর পরিণতি-এসব নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা বিতর্ক ও বিশ্লেষণ চলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানান, প্রায় ২২ বছরের রাজনৈতিক মিত্র ও নির্বাচনী সঙ্গী দুটি দল-বিএনপি ও জামায়াত। সে সম্পর্ক এখন অতীত। ২০২২ সালে দল দুটির সম্পর্ক শিথিল হয় ২০-দলীয় জোট ভেঙে দেওয়ার মধ্য দিয়ে। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন বিএনপি ও জামায়াত পরস্পর বিরোধপূর্ণ একটি জায়গায় আবির্ভূত হচ্ছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ বলছেন, রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতি দল দুটিকে প্রতিপক্ষের জায়গায় এনেছে। তাঁরা বলছেন, কাছাকাছি ভাবধারার দুটি দলের মধ্যে ভোটের মাঠে জামায়াতের অবস্থান যতই শক্ত হবে, বিএনপির সঙ্গে বিরোধের জায়গাটাও তত শক্ত হবে। কেউ কেউ এটাকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও পলায়ন পরবর্তী প্রেক্ষাপটে একটি নতুন রাজনৈতিক গতিপথের নির্দেশ হিসেবেও দেখছেন।

এসব আলোচনার মাঝেই আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন জামায়াত নেতারা।
নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ার বলেন, “সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। এটি কমিশন টেস্ট কেস হিসেবে বিবেচনা করতে পারে। তিনি বলেন, সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করলে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেই সময় দিতে জামায়াত প্রস্তুত। আমরা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে বলেছি। বাংলাদেশের জন্য এটি প্রয়োজন, সংসদ কার্যকরের জন্য প্রয়োজন।

অন্যদিকে দ্রুত নির্বাচন দিতে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করেছে বিএনপি। গত রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এরপর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তাঁর সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কখনোভাবেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন মেনে নেব না। তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যাশা, অতি দ্রুত একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে, যার মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে। নির্বাচনের পরে সংসদ প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন প্রবলম্বিত করা ঠিক হবে না।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!