ভূ-সম্পদ, রাজনৈতিক ও পারিবারিক ঐতিহ্যে দেশ স্বাধীনের আগে থেকেই খ্যাত খুলনা মহানগরীর বিশ্বাস পরিবার। নানা কারণে আলোচনায় এসেছে পরিবারটি। গত ১১ আগস্ট দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় “খুলনার ত্রাস স্বাধীনতাবিরোধী বিশ্বাস পরিবার রং পাল্টায়, স্বভাব যায় না” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন তারা। মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিবারের সদস্যদের অবস্থান জানালেন খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আব্দুল গফফার বিশ্বাস। লিখিত বক্তব্যের নানা প্রসঙ্গে বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে দুষলেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তার পিতা আব্দুর রহমান বিশ্বাস ছিলেন একজন বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা। যে আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও। তার পিতা মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ছোটভাইয়ের পরিবার আমাদের প্রতিবেশী হিসেবে ছিলেন। রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্নতা থাকলেও প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের তার সুসম্পর্ক সব সময় বিরাজমান ছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পিতা মুসলিম লীগের সাথে জড়িত থাকলেও কোন প্রকার অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। যে কারণে মুক্তিযুদ্ধের পর তাকে রাজনৈতিক কারণে কারাগারে নেয়া হলেও কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত না থাকায় বঙ্গবন্ধুর সরকার তাকে মুক্তি দেন।
এরপর তিনি তার বিএনপি, জাতীয় পার্টির সময়কার রাজনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যা দেন। একে একে তার ভ্রাতুষ্পপুত্র ও জামাতা ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান বিশ্বাস, তার দুই ছেলে শিবলী বিশ্বাস ও সোহেল বিশ্বাস এবং সোহেল বিশ্বাসের স্ত্রী তন্বী হত্যা মামলা, ছোট ভাই আ’লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস, তার ভাগ্নে কাউন্সিলর শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ পিন্টু সম্পর্কে রাজনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যা দেন।
একপর্যায়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটিতে কেসিসি মেয়র ও মহানগর আ’লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেকের মন্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। সুন্দরভাবে তিনি জবাব দিয়েছেন। সেখানে প্রকৃত ঘটনা সিটি মেয়র তুলে ধরেছেন। তবে ওই প্রতিবেদনে নগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর মন্তব্য দেয়া হয়েছে, যা অগ্রহণযোগ্য ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। বিএনপি ছাড়ার কারণে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করবেন এটাই স্বাভাবিক।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, খুলনাবাসী জানেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু একজন সুবিধাবাদী নেতা। তার কারণে বাংলাদেশের এক সময়ের সফল স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলী, সাবেক মেয়র শেখ তৈয়েবুর রহমান, সাবেক এমপি আলী আজগার লবীর মতো গুণী রাজনীতিকরা বিএনপির রাজনীতি করতে পারেননি। নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কাছে এখন গুটি কয়েক চাটুকর রয়েছে বলে উল্লেখ্য করে নানাভাবে সমালোচনা করেছেন জাতীয়পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল গফফার বিশ্বাস। সংবাদ সম্মেলনে তার পরিবার সদস্য ও এলাকার অর্ধশতাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এআইএন