রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এক জন এবং সংঘর্ষের সূত্রপাতকারী সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এর মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাতকারী সন্দেহে কক্সবাজার থেকে মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সজীব (২৩) ও মেহেদী হাসান বাপ্পিকে (২১) এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে শরীয়তপুর থেকে মো. মাহমুদুল হাসান সিয়ামকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিরা সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে বলে দাবি করছে র্যাব।
র্যাব বলছে, ঘটনার পর বাপ্পি ও সজীব কক্সবাজারে আত্মগোপন করেন। এর মধ্যে বাপ্পি পরিচয় লুকানোর জন্য লম্বা চুল কেটে ছোট করেন। এ ছাড়া কক্সবাজারের আবাসিক হোটেলে চাকরির চেষ্টাও চালান তাঁরা। অন্যদিকে, হত্যাকাণ্ডের পর সিয়াম গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার করা বাপ্পি ও সজীব নিউমার্কেটের ওয়েলকাম ফাস্টফুডের কর্মচারী ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, রাজধানীর নিউ মার্কেটের ক্যাপিটাল ফাস্টফুড ও ওয়েলকাম ফাস্টফুডের কর্মচারীদের মধ্যে গত ১৮ এপ্রিল ইফতার বিক্রির টেবিল বসানো নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার সূত্রপাত হয়। পরে তাঁরা পরিচিত কিছু দুষ্কৃতকারীকে ফোন দিয়ে ডেকে আনেন।
পরে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে ১০ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতকারী ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মচারীদের মারধর করে। এ সময় অন্যান্য দোকানের কর্মচারীরা আক্রমণ প্রতিহতের চেষ্টা চালান। দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
র্যাব আরও বলছে, ওই মারামারিকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কৌশলে গুজব ছড়িয়ে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করে। এতে নিউ মার্কেট এলাকায় ছাত্র ও কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য ও কন্টেন্ট ছড়িয়ে ইন্ধন দেওয়ার ফলে উত্তেজনা চরম সহিংসতায় রূপ নেয়। এর মধ্যে সংঘর্ষে নাহিদ (১৮) নামের এক কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী ও মোরসালিন (২৬) নামের আরেক জন গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁদের।
র্যাব জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া মো. মাহমুদুল হাসান সিয়াম সংঘর্ষের একপর্যায়ে নাহিদকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। ঘটনার পর গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান সিয়াম।
এ বিষয়গুলো বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফলে, র্যাব জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে র্যাব।
খুলনা গেজেট/ এস আই