বাংলা সিনেমার ‘স্টাইল আইকন’খ্যাত এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত।
একই সঙ্গে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে দেওয়া সালমান শাহর মায়ের নারাজি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। রোববার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ এ আদেশ দেন।
সালমানের মা নীলা চৌধুরীর আইনজীবী ফারুক আহম্মদ বলেন, সালমান শাহর মা লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি অসুস্থ। তাই দেশে আসতে পারেননি।
তার অনুমতিক্রমে আদালতে তার পক্ষে ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন দেওয়া হয়। কিন্তু আদালতে সালমান শাহর মা উপস্থিত না থাকায় তা আদালত গ্রহণ করেননি, খারিজ করে দিয়েছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে (ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত) আবেদন করব।
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার অধিকতর তদন্ত (চূড়ান্ত) প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
৬০০ পাতার ওই প্রতিবেদনে সালমানের মৃত্যুর বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে সালমান শাহ আত্মহত্যাই করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে পারিবারিক কলহ আর স্ত্রী সামিরার কারণে মা নিলুফা চৌধুরী ওরফে নীলা চৌধুরীকে ছেড়ে দূরে থাকার মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেই অভিমানী সালমান শাহ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তার মধ্যে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের বাসা থেকে শাহরিয়ার চৌধুরী ইমনের ওরফে সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওই সময় সালমানের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করা হয়।
অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।
সেখানে সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর বিচার বিভাগীয় তদন্তেও সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়।