খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ঢাকার চিঠি গ্রহণ করেছে দিল্লি, নিশ্চিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র
  ২০২৫ সালে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি ৭৬ দিন, একটানা বন্ধ ২৮ দিন

নানা আয়োজনে মোংলায় কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জন্মবার্ষিকী পালিত

মোংলা প্রতিনিধি

“ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো” জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা, তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৬৭তম জন্মবার্ষিকী আজ। নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে দিনটি। ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর এই দিনে বরিশালের রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাংলাদেশের কবিতায় অবিস্মরণীয় এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

দিনটির স্মরণে সোমবার (১৬ অক্টোবর) কবির পৈতৃক বাড়ি মোংলার মিঠেখালীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘রুদ্র স্মৃতি সংসদ’। সকাল ৯টায় মিঠাখালী বাজার থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি মিঠাখালী বাজার প্রদক্ষিণ করে কবির মাজারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় কবির কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। পরে সেখানে মিলাদ ও দোয়া এবং রুদ্র স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও রুদ্রের অনুজ সাংবাদিক সুমেল সারাফাত, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সহপাঠি ও উন্নয়ন সংস্থা ‘আমাদের গ্রাম’ এর পরিচালক রেজা সেলিম, মিঠাখালী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মণ্ডল, সাবেক চেয়ারম্যান ও রুদ্র স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি মাহমুদ হাসান ছোট মনি, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুর আলম শেখ, স্থানীয় ইউপি সদস্য উকিল উদ্দীন ইজারদারসহ রুদ্র স্মৃতি সংসদ এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যরা।

এছাড়া দিনটি স্মরণে উন্নয়ন সংস্থা ‘আমাদের গ্রাম’ এর আয়োজনে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাপীঠে দিনব্যাপী বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার আয়োজন করেছে। স্মরণসভা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও রুদ্রের গান পরিবেশিত হবে।

উল্লেখ্য, অকালপ্রয়াত এই কবি নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে। সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্যচেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল তার কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন ‘দিন আসবেই’ দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্র প্রতীক’-এ।

একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

অনুষ্ঠানের শেষে রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও রুদ্রের অনুজ সাংবাদিক সুমেল সারাফাত এর হাতে উপহারের বই তুলে দেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!