খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা
পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি

‘না খাওয়া আছি, কাইয়্যো আসে নাই খোঁজ নিবার’

গেজেট ডেস্ক 

টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর পানি বেড়ে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রতিনিয়ত প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসার চরের বাসিন্দা লালবানু বলেন, ‘হামার বাড়ির চারপাকে পানি। কোনো জাগাত শুকনা জাগা নাই। দুপুর পর্যন্ত না খাওয়া আছি, কাইয়্যো আসে নাই খোঁজ নিবার’।

নদীর পানি বেড়ে ইতোমধ্যে উলিপুরের মশালের চর, মুসার চর, চর বালাডোবা, বতুয়াতলী, হাতিয়া, সদরের গোয়ালপুরি, ভগবতীপুর, দই খাওয়া, চর ইয়ুথনেট, পোড়ার চর, চিলমারী সদর ইউনিয়ন, রৌমারী উপজেলার চর শৈলমারী ইউনিয়ন, যাদুরচর ইউনিয়ন; রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি, মোহনগঞ্জ, রাজীবপুর সদর ইউনিয়ন, রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়ন এবং ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী, বড়বাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া, বেরুবাড়ী ও বামণডাঙ্গা ইউনিয়নসহ জেলার ৯ উপজেলার ৪২১টি চর-দ্বীপচরের প্রায় দেড় লাখেরও বেশি মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

আজ শুক্রবার সকালে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯ সেমি বেড়ে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৮ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, অনেকেই ঘরের চালা ও ঘরের ভেতর মাচা করে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ উঠেছেন উঁচু বাঁধে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নারী, শিশু ও বয়স্করা। রান্না করা খাবারের সংকট, দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় যাতায়াত করছেন মানুষজন। ইতিমধ্যে শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালাডোবার বাসিন্দা ইব্রাহিম বলেন, ‘চার দিন থাকি হামার বাড়িত পানি। ঘরের ভিতরে পানি থাকার কারণে চালত আশ্রয় নিছি।’

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কুড়িগ্রামে ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় পানি বাড়ছে। প্রবাহ বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

জেলা প্রশাসক সাইদুল আরিফ বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলাগুলোতে ১৭৬ টন চাল ও ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী তা বিতরণ চলছে। নতুন করে আরও ৫০০ টন চাল ও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দুর্গত মানুষকে বিতরণ করা হবে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!