খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

নতুন পেনশনে যে সব সুযোগ-সুবিধা হারাবেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা

গেজেট ডেস্ক

নতুন পেনশন ব্যবস্থায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুবিধা ‘কমবে’। শিক্ষকেরা তাই নতুন ব্যবস্থাটি প্রত্যাহারের দাবি করছেন। এ দাবিতে সোমবার থেকে সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

অবশ্য নতুন কর্মসূচি চালু করতে অনড় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অন্য কোনো সংস্থার পক্ষ থেকে প্রত্যয় চালুর কোনো বিরোধিতা আসেনি বলেও পেনশন কর্তৃপক্ষের দাবি।

শিক্ষকদের সুবিধা কীভাবে কমবে

অর্থ বিভাগ গত ১৩ মার্চ প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রত্যয় কর্মসূচি পর্যালোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। কমিটির সদস্যরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির পরিচালক অধ্যাপক আবুল বারকাত, বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান মাসুদা ইয়াসমীন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মাসুদুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী এবং ফিন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সজীব হোসেন।

কমিটি একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমান ব্যবস্থায় একজন অধ্যাপক মাসে ৪৫ হাজার ৭৯০ টাকা পেনশন পান। এ জন্য তাঁদের বেতন থেকে কোনো টাকা কাটা হয় না। নতুন ব্যবস্থায় ৩০ বছর বয়সে যোগ দিয়ে ৬৫ বছর বয়সে অবসর নিলে মাসে মাসে বেতন থেকে টাকা কাটার পর পেনশন পাওয়া যাবে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা। কিন্তু আনুতোষিক বা গ্রাচ্যুইটি বাবদ এককালীন ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা নতুন ব্যবস্থায় পাওয়া যাবে না। এই টাকা পেনশন তহবিল বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে যে মুনাফা পাওয়া যায়, তা যোগ করলে বর্তমান ব্যবস্থায় পেনশন দাঁড়ায় মাসে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা।

কমিটি বলছে, বর্তমান ব্যবস্থায় পেনশনারের (বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মী) মৃত্যুর পর তাঁর নমিনি বা মনোনীত ব্যক্তি (স্বামী/স্ত্রী) আজীবন পেনশন সুবিধা পান। নতুন ব্যবস্থায় পেনশনারের মৃত্যু হলে তাঁর ৭৫ বছর বয়স যেদিন হতো, সেদিন পর্যন্ত পেনশন পাবেন মনোনীত ব্যক্তি, আজীবন নয়। এখন বছর বছর পেনশন বাড়ে, অর্থাৎ ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট (বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি) হয়। নতুন ব্যবস্থায় পেনশন বাড়বে না। অর্জিত ছুটির বিপরীতে অবসরকালে এখনকার মতো টাকা পাওয়া যাবে না। অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটির (এলপিআর) বিষয়ে নতুন ব্যবস্থায় কিছু বলা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শিক্ষকেরা ৬৫, কর্মকর্তারা ৬২ ও কর্মচারীরা ৬০ বছর বয়স হলে অবসরে যান। নতুন ব্যবস্থায় ৬০ বছর বয়সের পর পেনশন পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা এখন পেনশনের সঙ্গে বছরে দুটি উৎসব ভাতা ও একটি বৈশাখী ভাতা এবং মাসে মাসে চিকিৎসা ভাতা পান। নতুন ব্যবস্থায় বিষয়টি নিয়ে কিছু বলা নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, ‘প্রত্যয় চালুর মাধ্যমে বিদ্যমান সুবিধা কাটছাঁট করা হচ্ছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী এবং এতে শুভংকরের ফাঁকি আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং পাঁচ সদস্যের কমিটির মাধ্যমে পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছি। সেখানে দেখিয়েছি যে প্রত্যয় আমাদের জন্য কতটা অবমাননাকর। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি।’

দেশে এখন কার্যক্রমে থাকা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৫৫টি। সেখানে শিক্ষক রয়েছেন ১৬ হাজারের কিছু বেশি। কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ৩৪ হাজারের মতো।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!