সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খুলনার ব্যবসায়ীরা বর্ধিত দরে বিক্রি করছেন বোতলজাত সয়াবিন তেল ও এলপি গ্যাস। ‘নতুন রেটের মাল না আসার’ অজুহাত দেখিয়ে পূর্বের দরে বিক্রি করছেন তেল ও গ্যাস। সরকার নির্ধারিত দরে এ দু’টি পণ্য বিক্রি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯২ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। একই ভাবে ৫ লিটারের বোতল ৯৪০ টাকা ও খোলা এককেজি সয়াবিন ১৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। অথচ সরকার ৩ অক্টোবর সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৪ টাকা ও খোলা তেলে প্রতি লিটারে ১৭ টাকা দাম কমিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করে দেয়।
সরকার নির্ধারিত নতুন দর অনুযায়ী প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৫৮ টাকা, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন ১৭৮ টাকা ও ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৮৮০ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা।
অন্যদিকে এলপিজি বোতলের দাম ৩৫ টাকা কমিয়ে ১২০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সরকারের কথায় কর্ণপাত না করে ১২৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বর্ধিত দামের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন নতুন রেটের মাল কোম্পানী থেকে তারা বুঝে পাননি। যে কারণে তারা এ দরে বিক্রি করছেন।
রূপসা বাজারের বাগেরহাট স্টোরের মালিক বলেন, কোম্পানী এখনও নতুন রেটের মাল ছাড়েনি। পুরানো দরের বোতল শেষ হলেই মার্কেটে আসবে। প্রতিনিয়ত তেল বিক্রি করতে গিয়ে তাকে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমখি হতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের অধিক দরে তেল ক্রয় করতে হয়েছে।
একই বাজারের শহীদুল স্টোরের মালিককে তেলের দর জিজ্ঞাসা করলে পুরানো দর বলেন। মিডিয়া কর্মীর পরিচয় দিলে তিনি ক্যালকুলেটর চেপে সরকার নির্ধারিত দরের কথা জানান। তিনি বলেন, ব্যবসা করা দায় হয়ে পড়েছে। সরকার একেক সময়ে ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ করে। কোম্পানীও সেই নির্ধারিত দর বেধে আমাদের দেয়। তেলের দাম সরকার ১৪ টাকা কমিয়েছে ঠিক কিন্তু কোম্পানী আমাদের কাছ থেকে কম নিচ্ছে না।
একই কথা জানানো হয় আসাদ স্টোর থেকে। এখানও মালিক পক্ষ ১ লিটারের সয়াবিন তেল ১৯০ ও ৫ লিটারের সয়াবিন তেল ৯০০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। সেখান থেকে জানানো হয় যে, সরকারের নতুন দরের ঘোষণা তারা শুনেছেন কিন্তু বাস্তবায়ন হতে সময় লাগবে।
অপরদিকে বর্ধিত দরেই ১২ কেজি বোতলের এলপিজি গ্যাস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। আসাদ স্টোর থেকে জানানো হয় প্রতিবোতল এলপি গ্যাসের দাম ১২৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। জানতে চাইলে সেখান থেকে জানানো হয়, পূজার ছুটি হওয়ায় এখনও নতুন দরের গ্যাস তাদের কাছে আসেনি তাই পূর্বের দরে বিক্রি করছেন তারা।
গোলাম ছামদানি সাকিব নামে একজন ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার ভোজ্য তেল ও এলপিজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেটা মানছে না। তারা পূর্বের দরে বিক্রি করছেন। এ কথা শুনে তারা পাশে থাকা অপর এক ক্রেতা ক্ষোভের সুরে বলেন, আমাদের দেশে একবার যে জিনিষের দাম বাড়ে সহজে তা আর কমতে চায়না। আর কমলেও যাদের দেখার কথা তারা সঠিকভাবে দেখেনা।
সাধারণ ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ব্যবসায়ীরা এখন ‘নতুন রেটের মাল না আসার’ অজুহাত দেখালেও যখন দাম বাড়ে তখনতো ঘোষণার আগেই বাড়ানো হয়। তখন তারা ‘নতুন রেটের মাল আসার’ অপেক্ষায় তো থাকেন না। আসলে এটা ওদের একটা অপকৌশল। আর অসৎ ব্যবসায়ীদের এ অপকৌশলের বিপরীতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভোক্তা।
খুলনা গেজেট/এসজেড