খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিত
  প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকিতে থেকে প্রস্তুতি না নেয় আত্মঘাতী : প্রধান উপদেষ্টা
  সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, জয়, রাদওয়ান মুজিব, আজমিনা ও রেহেনা সিদ্দিকের বারিধারা, খুলনা, গোপালগঞ্জের ৬ কোটি টাকার প্লট-জমি জব্দ ও প্রশাসক নিয়োগের আদেশ

নড়াইলে সরকারি জায়গার গাছ কেটে সাফ, জব্দ করল প্রশাসন

নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদে সরকারি জায়গা থেকে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ১০৯ টি গাছ কর্তনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে অভিযান চালান নড়াইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী। এ সময় কাটা গাছের অংশ জব্দ করে উপজেলা ভূমি অফিসে নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়কের দুইপাশে মেহগনি ও আম গাছগুলো রোপণ করেছিলেন প্রশিকা নামে একটি এনজিও। সে সময় ওই সড়কটি ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় ভুক্ত মনে করে জমির মালিক হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ এবং দেখভালের জন্য ওই এলাকায় প্রশিকার গঠিত প্রভাতী যুব সংঘের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে গাছগুলো রোপণ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী,২০ বছর পর ২০২৯ সালে গাছগুলো বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ওই এলাকায় বিদ্যুতের সাব-স্টেশনের কাজ চলায় গাছগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। তাই গাছগুলো বিক্রির উদ্যোগ নেন চুক্তি করা তিনটি পক্ষ। তবে এতদিনে সড়কটি খাস হয়ে যায়। এ কারণে গাছগুলো কর্তনের অনুমতি চেয়ে নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করে প্রশিকা। এতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ও প্রভাতী যুবসংঘের সদস্যরা সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর করেন। তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগেই গাছগুলো কেটে বিক্রি করে দিচ্ছিলেন প্রভাতী যুবসংঘের সদস্যরা।
প্রশিকা নড়াইলের ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, গাছ কর্তনের জন্য তিনি ইউএনও বরাবর আবেদন করেছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ও মেম্বার ইব্রাহিম শেখ। কিন্তু প্রশাসন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেয় নি। হঠাৎ কয়েকদিন আগে মেম্বার ইব্রাহিম তাঁকে ফোন দিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক গাছের যে ডালপালা কাটা হয়েছিল সেগুলো বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। পড়ে থাকলে নষ্ট হয়ে যাবে, তাই ভেবে তাঁদের বিক্রি করে দিতে বলেন তিনি। এরপর কীভাবে কারা গাছ কেটেছে সেটা তিনি জানেন না৷
স্থানীয়রা বলছে, প্রভাতী যুব সংঘের সদস্যদের এই গাছ বিক্রির ইন্ধন ও নেতৃত্ব দিয়েছেন শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইব্রাহিম শেখ। বিষয়টি জানতেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান। তবে গাছ কাটাকাটির সময় প্রশিকার কাউকে স্থানীয়রা উপস্থিত থাকতে দেখে নি।
এ ব্যাপারে জানতে ইউপি সদস্য ইব্রাহিমকে ফোন দিলে তিনি ফোনে নয় সরাসরি বক্তব্য দিতে চান। পরবর্তীতে ব্যস্ত আছেন বলে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
তবে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন,প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কর্তনের অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন।  তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু না।
নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের  উল্লেখ করে হলেও রাস্তাটি ছিল ব্যক্তি মালিকদের জায়গার ওপর।  এরপর ২০১৫ সালে ওই সড়কটি খাস হয়ে যায়। আর খাস জমি থেকে এভাবে গাছ কেটে নেওয়া বৈধ নয়। তাই অভিযান চালিয়ে গাছগুলো জব্দ করা হয়েছে। জানা গেছে, শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ, প্রশিকা এবং তাদের গঠিত একটি সংগঠন এই কাজে জড়িত। এদের সকলের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!